হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ পৌর এলাকার উমেদনগর গ্রামে মা-বাবার সম্পত্তি রক্ষার করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন হালিমা খাতুন নামে এক স্কুল শিক্ষিকা। গতকাল সকালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সহযোগিতা চান। সংবাদ সম্মেলনে হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার পুরাতন খোয়াইমুখ এলাকার বাসিন্দা ও শায়েস্তাগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষিকা হালিমা খাতুন বলেন, তিনি হবিগঞ্জ পৌর এলাকার উমেদনগরের চেয়ারম্যান বাড়ির মরহুম আকবর আলী ও মরহুমা ময়ূর চান বিবির কন্যা। তার বাবা ১৯৭১ সালে মা ও ৫ বোনকে রেখে মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় হালিমা খাতুনসহ তার বোনেরা বাবার ক্রয়কৃত সম্পত্তি ও তার মায়ের পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু উক্ত সম্পত্তি জোরপূর্বক ভোগ দখল করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোকজন পায়তারা করেন। তিনি বলেন, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আথুকুড়া মৌজা, জেএল নং-২১৭, খতিয়ান নং-৫৪,৭০০, দাগ নং-৩৯০৪, মোয়াজি-১.৫৩ শতক (এক একর ৫৩ শতক)। উক্ত জায়গার প্রকৃত মালিক হালিমা খাতুনের নানা মিয়াধন উল্লা ওরফে মিয়াধন মিয়া। মিয়াধন উল্লার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী হিসেবে রেখে যান তার ১ম স্ত্রী জয়নব বিবি এবং ২য় স্ত্রী খাতিমুন্নেছাকে। এছাড়াও মিয়াধন উল্লার ১ম স্ত্রীর গর্ভে মমিনুল ইসলাম নামের এক পুত্র সন্তান ও সমরচান্দ, ওমরচান্দ ও ময়ুরচান কটি বিবিসহ ৩ কন্যা। ২য় স্ত্রীর গর্ভে হাজেরা খাতুন ও জাহেরা খাতুন নামে ২ কন্যা সন্তান। বিগত এসএ জরিপের সময় হালিমা খাতুনের নানা মিয়াধন উল্লার কোনো দাগের ভূমি তার মামা মমিনুল ইসলামের নামে ভুলবশত রেকর্ড হয়ে যায়। তার মামার নামে রেকর্ড হলেও মা, খালা ও মামা উক্ত ভূমিগুলো এজমালীতে ভোগ দখল করে থাকেন। এ অবস্থায় হালিমা খাতুনের নানার বোনের ছেলে আবুল হোসেন বাটোয়ারার দাবিতে ১৪৯/১৯৭৭ ইং স্বত্ব মোকদ্দমা দায়ের করেন। ওই মামলায় হালিমা খাতুনের মামাতো ভাই মমিনুল ইসলামের ছেলে নুরুল ইসলাম গং জবাব দাখিল করেছিলেন। এতে নি¤œ তফসিল বর্ণিত ভূমি হালিমা খাতুনের নানা মিয়াধন উল্লার একক সম্পত্তি বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু হালিমা খাতুনের মামার মৃত্যুর পর উমেদনগর গ্রামের মরহুম জহুর উদ্দিনের পুত্র মর্তুজ আলী তাদের অসহায়ত্বের সুযোগে সম্পত্তি আত্মসাত করার জন্য জাল দলিল সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালের সেটেলমেন্ট জরিপের সময় কর্মকর্তারা হালিমা খাতুনদের দখল দেখে তার মা ও খালা, তার নামে উক্ত ভূমির হিস্যা মোতাবেক মাঠপর্চা দেন। যার খতিয়ান নং-১১৩২৯। পরবর্তীতে মর্তুজ আলী জরিপ কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে তাদের ভলিউম থেকে কর্তন করে তফসিল বর্ণিত ভূমি রেকর্ড করে নেয়। এ অবস্থায় হালিমা খাতুন গং ১৯৯৮ সালে হবিগঞ্জ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৬৮। ওই মোকদ্দমায় ১৯৯৮ সালের ২২ অক্টোবর ১৬৫ নং মোকাদমায় মর্তুজ আলী গংদের বিরুদ্ধে আদালত অস্থায়ী ও অন্তবর্তীকালীন আদেশ প্রদান করেন। ওই ভূমি হালিমা খাতুন গংদেরকে বেদখল না করা কিংবা অন্যত্র হস্তান্তর না করার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে মর্তুজ আলী গংদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে হালিমা খাতুন গংদের বিরোধ চলছিল। বিগত হবিগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান মিজান হালিমা খাতুনের বাড়িতে গিয়ে নির্বাচনের পর এ বিষয়টি নিষ্পত্তি করার আশ^াস দেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর মেয়র মিজানুর রহমান মিজান বিষয়টি নিষ্পত্তি না করে ওই ভূমিতে মাটি ফেলে ভরাট করে দখলের চেষ্টা করছেন। সংবাদ সম্মেলনে হালিমা খাতুন আরো বলেন, মাটি ফেলানো অবস্থায় আমি বাধা প্রদান করি এবং আইনের দোহাই দেই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়রের লোকজন আমাদেরকে হুমকি প্রদান করে। এ অবস্থায় হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু এর কোন ফলাফল না পাওয়ায় পরবর্তীতে ৯ নভেম্বর পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করি। কিন্তু এর কোন সদুত্তর পাইনি। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জায়গা উদ্ধারের জন্য আহ্বান জানান শিক্ষিকা হালিমা খাতুন।