যুগের তালে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম বাংলার মানুষেরা নবান্নের ধান কেটে কত রকম পিঠা তৈরি করত তা বর্তমান প্রজন্ম চিন্তা করতে পারবে না। ধান কাটার সময় হলে কৃষকেরা কাচি, কোদাল, ছাতা, মারাইযন্ত্র যা নিজ হাতে তৈরি করে রাখত। গৃহস্থ রমণীরা পাট বা সুতা দিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করত। বাঁশ দিয়ে তৈরি করত কুলা, চালুনি, দোচন, ইত্যাদি। নতুন ধান গৃহে আসার পর হতে শুরুহত পিঠা বানানোর ধুম। বাংলার নারীমনের শিল্প সৌন্দর্যের প্রকাশ নকশি পিঠা। এতে আছে যুগ-যুগান্তরের বাংলার অন্তঃপুরিকাদের চিন্তা, চেতনা ও রসবোধ। পিঠা সুন্দর, স্বাদে ভরপুর ও বেশিদিন রাখার জন্য বিভিন্ন ডিজিইনে, সাইজে নকশা দিয়ে যে পিঠা তৈরি করা হয় তাকে নকশি পিঠা বলে ডাকত। অতিথি আপ্যায়ন, বিয়ে-সাদী, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে, বিশেষ অনুষ্ঠান, ঈদ, খৎনা, নবান্ন, শবেবরাত, শবে কদর ও জামাই আদরে নকশি পিঠা দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হত। হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার সংস্কৃতিকে ডিজিটাল যুগে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
এতে অংশগ্রহণ করে উপজেলার সরকারী বিভিন্ন অফিস। নানান রঙের পিঠা দিয়ে সাজিয়ে ছিল এক মাঠ। যেন বাংলার সব গৃহিনী ছুটে এসেছেন। মনমাতানো গানের আসর দিয়ে ছোট খোকামনিরা জয় করেছিল দর্শকদের। যার আগ্রহে আর সহযোগিতায় পিঠার রাজ্য বসেছিল তিনি হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নুসরাত ফাতিমা শশী। পিঠা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল কাদির লস্কর, ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর চৌধুরীসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, শিক্ষক, বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণ প্রমুখ।