পাঁচ বছর মেয়াদ থাকা স্বত্ত্বেও বর্তমান লীজ গ্রহীতাকে সরিয়ে অন্যকে সুযোগ দেয়ার চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলমান উচ্ছেদ অভিযানের আড়ালে এক লীজ গ্রহীতাকে সরিয়ে অন্য একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন হবিগঞ্জ পৌরসভার সচিব ফয়েজ উদ্দিন। এক্ষত্রে আর্থিক সুযোগ সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় হবিগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমেনা খাতুনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হবিগঞ্জ পৌর সচিব ছাড়াও মামলার অন্য ২য় পক্ষ হবিগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিলীপ দাস।
অভিযোগে জানা যায়, হবিগঞ্জ পৌরসভার দক্ষিণ দিকে অবস্থিত মাদার কেয়ার ডায়গনস্টিক সেন্টারের সংলগ্ন ড্রেনে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা ফেলে স্তুপে পরিণত করে আসছিল। ফলে এর উজান দিকের শায়েস্তানগরের বাসা বাড়ি অল্প বৃষ্টিতেই পানিতে সয়লাব হয়ে যেত। বিভিন্নভাবে উদ্যোগ নিয়েও ড্রেনে স্তুপ করে ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এসব সমস্যার কথা উল্লেখ করে হবিগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ ড্রেনের উপর লীজ গ্রহীতার নিজ খরচে দোকান ঘর নির্মাণ করার শর্তে একটি দোকান ঘর ভাড়া দেয়ার জন্য ২৯/৯/২০১৪ইং তারিখে পৌর সচিব ফয়েজ উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। গণবিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যাচাই বাছাই শেষে যশেরআব্দা এলাকার মোঃ শাহজাহান মিয়াকে লীজ গ্রহীতা হিসাবে ১০ বছরের জন্য নির্বাচন করে পৌর কর্তৃপক্ষ। শাহজাহান সেখানে নিজ খরচে দোকান ঘর নির্মাণ করে এবং বিভিন্ন স্টেশনারী ও পত্রিকা বিক্রির জন্য দোকান ঘরটি ব্যবহার করেন। এদিকে ড্রেনের মুখে ময়লা আবর্জনা ফেলতে না পারায় আশপাশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানসহ কিছু ব্যক্তির মারাত্মক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, পার্শ্ববর্তী মাদার কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ শাহজাহান মিয়াকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করে আসছেন। চলমান উচ্ছেদ অভিযানের এক পর্যায়ে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র দীলিপ দাস ও সচিব ফয়েজ উদ্দিন শাহজাহানকে দোকান ঘর ছেড়ে দিতে বলেন এবং শীঘ্রই তার দোকান বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হবে বলে জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শাহজাহান আইনের আশ্রয় নেন। একটি মামলা চলমান থাকার পরও কোনো ধরনের নোটিশ প্রদান ছাড়াই গত বৃহস্পতিবার পৌর সচিব ফয়েজ উদ্দিনের নেতৃত্বে শাহজাহানের দোকান গুড়িয়ে দেয়ার জন্য সেখানে শ্রমিকরা জড়ো হয়। এসময় মামলার দোহাই দিয়ে তা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করলে তিনি আইন আদালতের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেন। শাহজাহান মিয়া অভিযোগ করেন, গতকাল বিকালে তার দোকান উচ্ছেদ করতে যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী মাদার কেয়ারের লোকজন পৌর সচিবের সাথেই ছিলেন। উল্লেখ্য দোকান ঘরটি লীজ দেয়ার সময় বর্তমান পৌর সচিব নিজে স্বাক্ষর করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে পৌরসভার মাসিক কার্যবিবরণীতে ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিলীপ দাস কমিশনার হিসাবে স্বাক্ষর করেন। আর মোঃ শাহজাহান মিয়ার সাথে ৩০০ টাকার ভাড়াটিয়া চুক্তিনামায় পৌরসভার পক্ষে স্বাক্ষর করেন তখনকার পৌর মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ। লীজের মেয়াদ রয়েছে আরও ৫ বছর।