এসএম সুরুজ আলী ॥ সারাদেশের ন্যায় হবিগঞ্জেও অস্থিরভাবে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১ সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪০/৪৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার সকালে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০৫/১১০ টাকায় বিক্রি হলেও সন্ধ্যা থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। বার বার পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন পেঁয়াজের দাম আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। গতকাল চৌধুরী বাজার কাঁচামাল হাটায় গিয়ে দেখা গেছে গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে কাঁচামাল হাটায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১২০ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল বিকেল ৫টার পর থেকে পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এর ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে বিক্রি শুরু করেন।
এছাড়া গতকাল সরকারি মূল্য তালিকা অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি পোলাউর চাউল ৮২ টাকা, আস্তা মরিচ ১৭০, গুড়া মরিচ ২৩৫ টাকা, আস্তা হলুদ ১১০ টাকা, আস্তা ধনিয়া ১০৫ টাকা, ছোলা ৭২ টাকা, ছানার ডাইল ৩৬ টাকা, পেঁয়াজ এলসি ১১০ টাকা, পেঁয়াজ বারমা ১০৫ টাকা (সকাল) এর মূল্য। এছাড়া রসুন এলসি ১৩২ টাকা, রসুন দেশী ১৫০ টাকা, চিনি ৫৬ টাকা, সয়াবিন লোজ সিটি ৭০ টাকা, মশুর ডাল দেশী ১১২ টাকা, মশুর ডাল মোটা ৫২ টাকা, সাদা মটর ৩৫ টাকা, সাগোদানা ৯৫ টাকা, বেশন ৪৫ টাকা, জিরা আস্তা ৩৩০ টাকা, মুগ ডাইল মধ্য ১১০ টাকা, আটা লোজ ২৫ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু পেঁয়াজের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
চৌধুরী বাজারে পেঁয়াজ ক্রয় করতে আসা উমেদনগরের রইছ আলী জানান, ১ মাস আগে ৫০/৫৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করেছি। দিন দিন পেঁয়াজের দাম বেড়ে গিয়ে এখন ১২০ টাকা দাঁড়িয়েছে। আগে বাজারে এক সাথে ৪/৫ কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করলেও এখন আধা কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করছি। তিনি বলেন, বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ধানের দাম সাড়ে ৪শ’ টাকা। এ হিসেবে কৃষকরা ১ মণ ধান বিক্রি করে ৪ কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করতে পারবেন।
মিজানুর রহমান নামে এক ক্রেতা জানান, এখন আর বাজারে আসতে ইচ্ছা করে না। এক কেজি পেঁয়াজ যদি ১২০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়, তাহলে অন্য সব পণ্য কী করে কিনব। কয়েকদিন পর পর পেঁয়াজের দাম বাড়ে, কিন্তু যেখানে কাজ করি সেখানে তো হঠাৎ করে বেতন বাড়ে না।
চৌধুরী বাজার কাঁচামাল হাটার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান জানান, সকালে আমরা পাইকারী প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯৫/১০০ টাকা দরে ক্রয় করে খুচরা ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দামে বিক্রি করেছি। বিকেলে পাইকারী বাজারে আরেক দফা পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। আমাদেরকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারী ১১২ টাকা দরে ক্রয় করতে হয়। তিনি জানান, বস্তায় ৪/৫ কেজি পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। সেগুলোর মধ্যে কিছুটা ফেলে দিতে হয়। এ হিসেবে ১২০ টাকা কেজি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করেও আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। তিনি বলেন, পেঁয়াজ বিক্রি করার ইচ্ছা আর হয় না। কিন্তু পেঁয়াজ না বিক্রি করলেও যারা পেঁয়াজের সাথে অন্যান্য মসলা ক্রয় করতে আসবেন তারা দোকান থেকে ফিরে যাবেন। তিনি পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
কৃষকদের ৪ কেজি পেঁয়াজ কিনতে গেলে এক মণ ধান বিক্রি করতে হবে
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com