নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের মৌজপুর গ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবোত্তর সম্পত্তি ও কয়েকটি গ্রামের হাওরাঞ্চলের চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জের ধরে এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের মৌজপুর গ্রামে কালাচান তলী নামক স্থানে যুগ যুগ ধরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূজা ও বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছেন। কুমারকাদা, দুর্গাপুর, হোসেনপুর, মৌজপুরসহ কয়েকটি গ্রামের লোকজন কালাচান তলীতে প্রবেশ এবং পার্শ¦বর্তী হাওরাঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা হিসেবে এ রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছিলেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ সম্প্রতি কালাচান তলীর দেবোত্তর সম্পত্তির রাস্তা ও হাওড়ে যাতায়াতের রাস্তা কুমারকাদা গ্রামের এক লন্ডন প্রবাসী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তার লোকজনের মাধ্যমে দখল করতে মরিয়া উঠেন। তিনি প্রবাসে থাকায় তার মামা উক্ত স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মৌজপুরের বাসিন্দা অরুণ দেবনাথ জানান, পাকিস্তান আমল থেকে এই রাস্তা কালাচান তলীর রাস্তা ও হাওরাঞ্চলে চলাচলের রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ইদানিং জনৈক লন্ডন প্রবাসীর লোকজন উক্ত রাস্তার উপরে বাঁশের বেড়া দিয়ে এলাকাবাসীর চলাচলে বিঘœসহ আমাদের ধর্মীয় কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আমরা দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার ও রাস্তা দিয়ে নির্বিঘেœœ চলাচলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
দুর্গাপুর গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বী হাজী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমার বয়স ৮০ বছর। আমরা জন্মের পর থেকে কয়েকটি গ্রামের লোকজন উক্ত রাস্তা হাওরাঞ্চলে যাতায়াতে ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা কালাচান তলীতে যাতায়াতে ব্যবহার করে আসছেন। কিছুদিন ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র উক্ত রাস্তা দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠায় আমাদের এলাকার শান্ত পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। বিশিষ্ঠ শালিস বিচারক আহমদ আলী, লিংকন দেবনাথ, বাছির মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন, আমরা একাধিকবার বিষয়টি সামাজিক বিচারের মাধ্যমে শেষ করে দিতে চাইলে লন্ডন প্রবাসীর লোকজন আমাদের ডাকে সাড়া দেয়নি।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন-হাসান বলেন, দেবোত্তর সম্পত্তি ও মানুষের চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।