হবিগঞ্জের বিশিষ্ট দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ এসএস আল-আমিন সুমন একজন সৌখিন ফটোগ্রাফার। তিনি ফেসবুকে জনপ্রিয় ফটোগ্রাফি অনলাইন গ্রুপ ‘শখের ছবিয়াল’ এর অন্যতম এডমিন ও সমন্বয়কারী এবং ফটোগ্রাফি সোসাইটি অব হবিগঞ্জ এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি ‘পাখির চোখে হবিগঞ্জ’ শিরোনামে ফেসবুকে একটি অ্যালবাম চালু করেছেন। যাতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যামেরায় আকাশ থেকে ছবি ধারণ করেন। সেই ছবিতে হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানের চিত্র সুন্দরভাবে ফুটে উঠে। তাঁর উদ্দেশ্য ছবির মাধ্যমে মানুষের কাছে হবিগঞ্জকে তুলে ধরা। এখন থেকে ডাঃ সুমন তাঁর ছবি ও ছবির পরিচিতি তুলে ধরছেন দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকায়। আজ প্রকাশিত হলো শাহজিবাজার হযরত শাহ সুলেমান ফতেহ গাজী (রঃ) এর মাজার শরীফ এর উপর থেকে তোলা তাঁর ছবি।

ডাঃ এসএস আল-আমিন সুমন

শাহজিবাজার হযরত শাহ সুলেমান ফতেহ গাজী (রঃ) এর মাজার শরীফ ঃ প্রাচীন তরফ বা তুঙ্গাচলকে দ্বাদশ শতাব্দীর রাজ্য বলে সৈয়দ মোস্তফা কামাল সহ অনেকে মনে করেন। যে স্থানে তুঙ্গাচলের রাজধানী ছিল এ স্থান রাজপুর নামে পরিচিত ছিল। যা বর্তমানে বিষগ্রাম বা বিষগাও বলে অভিহিত হচ্ছে। এ রাজ্যের তিপ্রা রাজা ‘ত্রপিবিঞ্চু’ কে প্রথম শাসক বলে উল্লেখ করা হয়। তবে ত্রপিবিঞ্চু কে? এবং তিনি কোথা থেকে এসেছেন তা কিছুই জানা যায়নি। ত্রপিবিঞ্চুর মৃত্যুর পর আচক নারায়ণ নামের যুবক রাজকন্যা লালসা দেবীকে বিবাহ করে রাজ্যধিকার লাভ করে। আচক নারায়ণের সময় কাজী নুরুদ্দীন নামের জনৈক মুসলমান সপরিবারে এ রাজ্যে বসবাস করতেন। তুঙ্গাচল বা তরফ রাজ্যের আচক নারয়ণ গো হত্যার দায়ে কাজী নুরুদ্দীনের শিশুকে হত্যা করেছিল। এ সংবাদ শুনে ১৩০৪ সালে অত্যাচারী রাজাকে শায়েস্তা করতে সৈয়দ নাসির উদ্দীন ১২ জন দরবেশ সহ প্রেরিত হন। আচক নারায়ণ শাহজালালের সিলেট আগমন ও গৌড় গোবিন্দের পরিণতি সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তাই তিনি দরবেশদের আগমন বার্তা শুনে ভয়ে নিজ রাজ্য ছেড়ে ত্রিপুরা রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নেন। সৈয়দ নাসির উদ্দীন সিলেট থেকে যাত্রা শুরু করে ভাটি (জলাবদ্ধ নিম্নভাগ) অঞ্চল পার হয়ে প্রথমে উচাআইল নামক স্থান অবস্থান নেন। এখানে অবস্থানকালে তিনি আচক নারয়ণের পলায়ন বার্তা জানতে পারেন। পরে স্বসৈন্যে রাজপুরে প্রবেশ করে তুঙ্গাচল রাজ্যে নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেন। আর এভাবে বার আউলিয়া দ্বারা এ রাজ্য বিজিত হয় বলে এটিকে বার আউলিয়ার মুলুক বলেও অভিহিত করা হতো। তরফ বিজয়ার্থী সৈয়দ নাসির উদ্দীনের সঙ্গী ১১ আউলিয়া ও দরবেশ কিছু দিন তরফে অবস্থান করার পর ইসলাম ধর্মের প্রচার কাজ অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নিজ নিজ আস্তানা গড়ে সেখানেই জীবনাতিবাহিত করেন। উক্ত আউলিয়াগণের নাম ও বর্তমানে অবস্থিত মাজার- শাহ সৈয়দ আহমদ গেছু দরাজ ওরফে কল্লা শহীদ, মাজার; আখাউড়া, খরমপুর, ব্রাহ্মণবাড়য়া; শাহ সুলেমান ফতেহ গাজী বাগাদাদী মাজার,শাহজিবাজার; সৈয়দ শাহনুর, জালালসাফ নবীগঞ্জ; শাহ তাজ উদ্দীন কোরেশী মাজার চৌকি-পরগণা, নবীগঞ্জ; শাহ বদর উদ্দীন মাজার, বদরপুর, করিমগঞ্জ, কাছাড়, ভারত; শাহ আরেফিন মাজার লাউড়, সুনামগঞ্জ; শাহ সুলতান কমর উদ্দীন মাজার, মদনপুর, নেত্রকোনা; শাহ রুকন উদ্দীন আনসারী মাজার শাহবাজপুর, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া; শাহ মাহমুদ মাজার লশকরপুর, হবিগঞ্জ; শাহ গাজী মাজার বিশগাও গাজীপুর, চুনারুঘাট; শাহ হাফিজ হাসান শহীদ মাজার লস্করপুর হবিগঞ্জ; শাহ বদর মাজার চট্টগ্রাম।