চোখের সামনে চিতায় জ্বলল স্ত্রী-সন্তানের মরদেহ

আলমগীর কবির, মাধবপুর থেকে ॥ নিয়তি কত যে নিষ্ঠুর। চোখের সামনে চিতার আগুনে শেষকৃত্য হলো প্রিয়তমা স্ত্রী ও আদরের সন্তানের। কে জানতো এমন দৃশ্য দেখতে হবে হতভাগা স্বামী-পিতার। এ যেন নিয়তির লেখা। প্রিয়জন হারানোর এমন দৃশ্য দেখে শোকে পাথর হয়ে গেছেন উত্তম কুমার রায়। শুধু দুচোখ দিয়ে নিয়তির লেখা দেখছেন। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় স্ত্রী রুবি রায় ও আদরের কন্যা ভিয়াংকা রায়কে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বানেশ্বরপুর গ্রামে দাহ করা হয়েছে। পোল্যান্ড থেকে ফিরে এসে শনিবার সকাল ১০ টায় উত্তম কুমার রায় স্ত্রী ও কন্যার মরদেহ ঢাকার হিমঘর থেকে গ্রহন করে বেলা ৩ টার দিকে লাশ নিয়ে বানেশ্বরপুর গ্রামে পৌছান। লাশ এসে পৌছানোর পর সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যর অবতারণা হয়। তাদেরকে এক নজর দেখতে প্রতিবেশিসহ গ্রামের শত শত মানুষ জড়ো হন।
ঢাকার বেইলী রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত মাধবপুরের মা মেয়ে ভিয়াংকা রায় (১৭) ও রুবি রায় (৪০) এর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে হাজারো মানুষের সমাগম ছিল। তাদের শেষ বারের মতো দেখতে বাংলাদেশ সরকারের সাবেক নৌ-পরিবহন সচিব অশোক মাধব রায় সহ আত্মীয় স্বজন ও এলাকার বিপুলসংখ্যক লোকজন সেখানে আসেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভিয়াংকা রায় ও তার মা বেইলী রোডের গ্রিন কোজি কটেজের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় খাবার আনতে গিয়ে অগ্নিকান্ডের শিকার হয়ে নিহত হন। ১৯৯৬ সালে ভিয়াংকা রায় এর পিতা উত্তম কুমার রায় দক্ষিণ কোরিয়ায় হুন্দাই কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত অবস্থায় সেখানে ফিলিপাইনের নাগরিক রুবি রায়কে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে তিনি ওই কোম্পানির কাজের জন্য পোল্যান্ড যান। এসময় তিনি স্ত্রী কন্যাকে দেশে রেখে যান। তারা ঢাকার মালিবাগে থাকতেন।