নদীর সঠিক সীমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী সীমানা পিলার স্থাপনের দাবি
হবিগঞ্জ শহরের প্রধান জলাধার হচ্ছে পুরাতন খোয়াই নদী। বৃষ্টির পানির প্রধান আধার নদীটির অধিকাংশ ভরাট-দখল হয়ে যাওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের জলাবদ্ধতা এবং কৃত্রিম বন্যা দেখা দেয়। যা কয়েক বছর ধরে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বাসাবাড়ি, বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা এমনকি প্রধান সড়কও ডুবে যায়। মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা ও জলাবদ্ধতামুক্ত স্বাস্থ্যকর নগরী গড়ে তুলতে পুরাতন খোয়াই নদীর পুরো অংশের দখল উচ্ছেদ করে খনন ও সংরক্ষণ করা জরুরি।
হবিগঞ্জ পৌরসভা পুরাতন খোয়াই নদীর নিউ মুসলিম কোয়ার্টার এলাকা পরিষ্কার পরিছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে শুক্রবার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখা ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার এর পক্ষ থেকে একথা বলা হয়। বাপা হবিগঞ্জ শাখার সভাপতি অধ্যাপক মো: ইকরামুল ওয়াদুদ এর নেতৃত্বে পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী মমিন, সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট বিজন বিহারী দাস, প্রকৌশলী আব্দুল মুনিম চৌধুরী বুলবুল, এস এ শওকত চৌধুরী, পুরাতন খোয়াই নদী পুরুদ্ধার ও পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসবি সাঈদ চৌধুরী প্রমূখ।
খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপা সেক্রেটারি তোফাজ্জল সোহেল বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে নদীতে। বিভিন্ন গুষ্টি এবং নদী তীরের অনেক বাসিন্দাও নদীটি দখলে নিয়েছেন। দখলের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। প্রায় ২ দশক ধরে পরিবেশবাদী সংগঠন ও নাগরিক সমাজ পুরাতন খোয়াই নদী দখলমুক্ত করে সংরক্ষণের জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে নদী থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন। মাছুলিয়া থেকে শায়েস্তানগর পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গা থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয় সেসময়। তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ বদলি হলে উচ্ছেদ কার্যক্রম থেমে যায় এবং পরবর্তীতে উচ্ছেদকৃত অংশ পুনরায় দখলে চলে যায়।
তিনি নদীটি সংরক্ষণের মাধ্যমে শহরকে সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর নগর হিসেবে গড়ে তোলার দাবি রাখেন। পাশাপাশি যথাযথ পরিকল্পনা ও বিজ্ঞান ভিত্তিক চিন্তার মাধ্যমে নদীটিকে নাগরিক সুবিধায় সম্পৃক্ত করার দাবি জানান।
বাপা সভাপতি অধ্যাপক মোঃ ইকরামুল ওয়াদুদ নদীটি পরিস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করায় হবিগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, খোয়াই নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে এই নগর ও সভ্যতা। মানুষের প্রয়োজনেই ১৯৭৬-৭৭ ও ৭৮-৭৯ সনে দুই দফায় ৫ কিলোমিটার লুপকাটিং এর মাধ্যমে সেসময় নদীটিকে শহরের বাইরে দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। শহরের ভিতরের থেকে যাওয়া অংশটুকু পুরাতন খোয়াই নদী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। অরক্ষিত থাকলে যা হবার তাই হয়েছে। নদীর বিভিন্ন অংশ নানাভাবে ভরাট-দখল হয়েছে। এর ফলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা, কৃত্রিম বন্যা আর শুষ্ক মৌসুমে মশা-মাছির আকর, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায় যে কারণে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দেয়। এইসব সমস্যা সমাধানে পুরাতন খোয়াই নদী রক্ষার বিকল্প নেই। নদীর সঠিক সীমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী সীমানা পিলার স্থাপনের দাবি জানান তিনি। বিজ্ঞপ্তি
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com