দিবসটি পালনে হবিগঞ্জে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতি হারিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যা করে জন্ম দেয় জঘন্য এক অধ্যায়ের। পাষন্ড ঘাতকের বুলেট থেকে রেহাই পায়নি ছোট্ট শিশু রাসেলও। বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকীতে শোক আর শ্রদ্ধায় পুরো জাতি স্মরণ করছে তাদের। দিবসটি উপলক্ষে সরকারিভাবে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকেও পালন করা হচ্ছে নানা কর্মসূচি। দিবসটি উপলক্ষে আজ জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
১৯৭৫ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিজ বাসভবনে সপরিবারে শহীদ হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সঙ্গে সেদিন প্রাণ হারান তার প্রিয় সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, নবপরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। আরও প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, মেয়ে বেবি সেরনিয়াবাত, শিশু পৌত্র সুকান্ত বাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী আরজু মনি, নিকটাত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুর নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্ণেল জামিল। পুুরো জাতি আজ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এই দিনের ঘটনায় শাহাদাতবরণকারী সবাইকে স্মরণ করবে গভীর শ্রদ্ধাভরে। সেদিন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
১৫ আগস্ট জাতির পিতার ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন হবিগঞ্জ দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, সকাল ৯টায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন ও ফাতেহা পাঠ, সকাল সাড়ে ৯টায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন, সকাল ১০টায় শোক র‌্যালী ও মৌন মিছিল, সকাল ১১টায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল, দুপুর ১২টায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার ও যুবঋণ বিতরণ, সকল মসজিদে বাদ যোহর ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত এবং সুবিধামত সময়ে সকল মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন, জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এবং অন্যান্য ভাষণ প্রচার, হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাদ্য পরিবেশন। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবসের সাথে সঙ্গতি রেখে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র/নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।