সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চুনারুঘাটের আমতলীর চোরদের শনাক্ত ॥ চুরি ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ১০
চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাটে চুরি ডাকাতি রোধে মাঠে পুলিশের স্পেশাল টিম কাজ করছে। সাম্প্রতিক চুনারুঘাটের বিভিন্ন স্থানে চুরির ঘটনায় আতঙ্ক দেখা দিলে থানা পুলিশ কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে চুনারুঘাট থানার ওসি রাশেদুল হক উপজেলাবাসীকে স্বস্তিতে রাখতে পুলিশ সদস্যদের ছুটি বাতিলসহ উপজেলাজুড়ে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছেন। পাশাপাশি উপজেলার প্রবেশ পথগুলোতে বিশেষ চেক পোস্ট বসিয়ে তল্লাসী করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, চোরচক্রকে গ্রেপ্তার করতে বিশেষ নিরাপত্তা ছক তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অতীতের নানা বিষয় মাথায় রেখে এবার মাঠে কাজ করছে পুলিশ। অপরাধীরা যাতে অপরাধ করে পার পেয়ে না যায় সেজন্য তৎপর রয়েছে পুলিশের স্পেশাল টিমও। পাশাপাশি বাইরের অপরাধীরা যাতে উপজেলায় প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রবেশ পথগুলোতে রয়েছে কড়া নজরদারি। চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি রাশেদুল হক বলেন, উপজেলা যাতে সাধারণ মানুষের কাছে স্বস্তিদায়ক হয় সে জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিশেষ পাহারা বসানো হয়েছে। যাহাতে গভীর রাতে চুরি ডাকাতি করতে না পারে তাই অপরাধীদের দমন করতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। এছাড়াও চোর ডাকাত গ্রেপ্তার করতে টহল জোরদার ও রাত্রিকালীন চেকপোস্ট সহ চোর চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য মাঠ পর্যায়ে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে। তিনি আরও বলেন, চুরির বিষয়ে আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। চুরির ঘটনাস্থল এবং আশপাশ থেকে আরও কারা জড়িত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর মধ্যে গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে অনেকের নাম পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই এসব বলা সম্ভব হচ্ছে না। তদন্তের পর দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এদিকে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ রাত্রিকালীন পাহারার পাশাপাশি উপজেলা জুড়ে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা রোধ ও অপরাধ দমনে সতর্ক পুলিশ।
জানা যায়, রবিবার দিবাগত রাতে সাম্প্রতিক সময়ে চুনারুঘাটে আমতলী মুদির দোকানে চুরির ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের স্বর্ণরেখা এলাকার মৃত আব্দুল মতিনের পুত্র মেহেদী হাসান(২৪) ও একই উপজেলার লামাতাশি ইউনিয়নের হরিপাশা গ্রামের এরাজত উল্ল্যার পুত্র খয়রুল্লাহ (৩৮)। পরে তাদের দেখানো তথ্য মতে চুরি হওয়া বড় বড় দুই ড্রাম সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি পিক-আপ ভ্যান জব্দ করা হয়। ওসি আরো বলেন, রবিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে ওই দুই চোর ছাড়াও চুনারুঘাট পৌরসভার নয়ানী গ্রামের বাবুল মিয়ার অটোরিকশা টমটম চুরির ঘটনায় নয়ানী এলাকার কুখ্যাত চোর জাহির মিয়ার পুত্র কামাল মিয়া(৩৪), পৌরসভার উত্তর বাজার জাকারিয়া বাসায় চুরির ঘটনায় চেতনানাশক স্প্রে পার্টির সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য গোবরখলা গ্রামের আব্দুল শহীদের ছেলে মাসুক(৩৯) ও তার সহযোগী দুধপাতিল এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে আজিম (২৮), ধনশ্রী গ্রামের ডাকাতির ঘটনায় শায়েস্তাগঞ্জ নিশাপট এলাকার হানিফ মিয়ার পুত্র শিপন (২৫), পৌর শহরের উত্তর বাজার হাবিবুর রহমানের বাসায় চুরির ঘটনায় অজ্ঞান পার্টির সদস্য দুধপাতিল এলাকার শফিক মিয়ার পুত্র রিয়াজ (২২) সহ বিভিন্ন মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।