সোহাগের মামা বিদেশে থাকায় তার মামীর প্রতি কুদৃষ্টি পড়ে সোহাগের ৩ বন্ধুর। তারা সোহাগকে বলেছিল তার মামীকে জুসের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়াতে, কিন্তু সোহাগ তাদের কথায় রাজি না হয়ে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ৩ লম্পট সোহাগকে খুন করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মামীকে সম্ভ্রমহানি থেকে রক্ষা করতে গিয়ে লম্পট বন্ধুদের হাতে খুন হয়েছে ১৩ বছর বয়সী সোহাগ। খুনের প্রায় আড়াই মাস পর সোহাগের খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর ঘাতক ফজলু মিয়া (২৫) সোহাগকে খুনের কথা স্বীকার করে খুনের বর্ণনা দিয়েছে। ঘাতক ফজলু মিয়া উপজেলার লালচান্দ গ্রামের নবীর হোসেনের পুত্র। শনিবার গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার রঘুনন্দন রাবার বাগানের গোপন আস্তানা থেকে ফজলু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু বকর খান ঘাতক ফজলু মিয়ার স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জানান, সোহাগের পিতা হিরণ মিয়া মারা যাওয়ার পর থেকে সোহাগের মা আছমা তার সন্তানদের নিয়ে পিত্রালয়ে ভাইয়ের বানানো বাড়িতেই বসবাস করছেন। সোহাগের মামা আল আমিন দুবাই প্রবাসী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রবাসে রয়েছেন। সোহাগের মামা আল আমিন প্রবাসে থাকায় তার মামীর দিকে কু-দৃষ্টি পড়ে পাশের বাড়ির তিন বন্ধুর। তারা সোহাগের মামীর সাথে দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হওয়ার প্রলোভনে সোহাগকে বলে তার মামীকে ফ্রুটো জুসের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়াতে। সোহাগ তাদের কথায় রাজি হয়নি বরং সে বিষয়টি তার মা ও মামীকে জানায়। বিষয়টি সোহাগের পরিবার ফজলু মিয়ার মা আইয়ুব চানকে জানায়। এরপর ওই তিন লম্পট সোহাগের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। গত ৪ ডিসেম্বর রাত ১২টায় বিশেষ প্রয়োজনের কথা বলে সোহাগকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায় তিন লম্পট। ওই রাতেই তারা সোহাগকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাঁশবাগানের ধোপাছড়া খালের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন ৫ ডিসেম্বর সোহাগের নানার বাড়ির বসতঘরের পশ্চিম দিকে ধোপাছড়া খালের পানিতে গামছা দিয়ে বাধা রক্তাক্ত অবস্থায় তার ভাসমান লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. আলী আশরাফ জানান, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সোহাগকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘাতকরা। পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত রঙ্গু মিয়ার ছেলে রাজু নামের একজনকে আটক করে। ৬ ডিসেম্বর সোহাগের মা বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি জানান, সোহাগ হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত রাজু ও ফজলুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরেকজন পলাতক। অপর আসামীসহ এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় ফজলুকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।