মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মেয়েটি কয়েকবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল ॥ প্রেমিক লেচু মিয়া গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের আবাসিক হোটেলে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে ইন্টারনেটে ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে লেচু মিয়া (২৫) নামের এক সবজি ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তার দুই সহযোগী বন্ধু পালিয়ে গেছে। গতকাল শনিবার ভোরে সদর থানার একদল পুলিশ সদর উপজেলার পইল গ্রামে অভিযান চালিয়ে লেচু মিয়াকে আটক করে। সে ওই গ্রামের মন্নর আলীর পুত্র এবং মৌলভীবাজার জেলার পৌরসভা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদি হয়ে লেচু মিয়াকে প্রধান আসামি করে আরও ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালদারিয়া গ্রামের বাসিন্দা, হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্রী (২২) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে লেচু মিয়ার। প্রায়ই তারা শহরের বিভিন্ন ফাস্টফুড দোকানে আড্ডা দিতো। ওই ছাত্রী সুন্দরী হওয়ার পরও লেচু মিয়ার টাকার কাছে হার মানে। ফলে লেচু মিয়ার প্রতি ওই ছাত্রী ক্রমেই দুর্বল হয়। আর এই দুর্বলতার সুযোগে গত ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে খাওয়া দাওয়ার কথা বলে ওই ছাত্রীকে শহরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায় এবং একটি রুমে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সাথে কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। লম্পট লেচু মিয়া গোপনে ওই ছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করে রাখে। এরপর থেকে লেচু মিয়া তাকে ব্লেকমেইল করে একাধিকবার বিভিন্ন হোটেল ও বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এতে ওই ছাত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তার ব্ল্যাকমেইলের কারণে ওই ছাত্রী বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পরিবারের কথা চিন্তা করে সে আত্মহত্যা করেনি। লেচুকে এ কাজে সহযোগিতা করে আসছিল তার দুই বন্ধু। অবশেষে নিরূপায় হয়ে ওই ছাত্রী বিষয়টি পরিবারকে খুলে বললে লেচু মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে ওই ছাত্রী পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ লেচু মিয়াকে গ্রেফতার করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ লেচু মিয়া তার অপরাধ স্বীকার করে এবং দুই বন্ধুর নাম প্রকাশ করে। এ ঘটনায় ওই কলেজছাত্রী বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন।
সদর থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী জানান, মামলা রুজু করে আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর দুই আসামিকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।