চুনারুঘাটে অমূল্য দেবনাথকে খুনের অভিযোগে দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রানীরকোর্টের বাসিন্দা অমূল্য দেবনাথের মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল রোববার হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন অমূল্য দেবনাথের ভাতিজা সুকেশ দেবনাথ। মামলায় আসামী করা হয় অমূল্য দেবনাথের দ্বিতীয় স্ত্রী শিপ্রা রাণী দেবনাথ ও তার ভাই অতিন্দ্র দেবনাথসহ আরো অজ্ঞাত কয়েকজনকে।
বাদী সুকেশ দেবনাথ মামলায় উল্লেখ করেন, অমূল্য দেবনাথের প্রথম স্ত্রী অসুস্থতাজনিত কারণে নিঃসন্তান অবস্থায় প্রায় ১৫ বছর পূর্বে মারা যান। পরে তিনি মাধবপুর উপজেলার ঘিলাতলী এলাকার বিদুর চন্দ্র দেবনাথের মেয়ে শিপ্রা রাণী দেবনাথকে বিয়ে করেন। এর কিছুদিন পর শিপ্রা রাণীর আসল চেহারা প্রকাশ পায়। এক পর্যায়ে সহজসরল বয়স্ক অমূল্য দেবনাথের অসহায়ত্বের সুযোগে শিপ্রা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। বিষয়টি এলাকায় প্রকাশ পায়। এসব জানার পর স্বামীর সাথে শিপ্রার মনোমালিন্য তৈরী হয়। অবশেষে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মুরুব্বীয়ানের কাছে অমূল্য দেবনাথ বিচার প্রার্থী হন। এ প্রেক্ষিতে শিপ্রাকে মুরুব্বীয়ানরা সতর্ক করে ভালভাবে চলার জন্য বলেন। পরবর্তীতে শিপ্রা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এরই মধ্যে প্রায় ৫ মাস পূর্বে শিপ্রা তার স্বামী অমূল্য দেবনাথকে পরিকল্পনা মোতাবেক চুনারুঘাট শহরের হাতুন্ডায় নিয়ে এসে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করে।
এক পর্যায়ে শিপ্রা স্বামী অমূল্য দেবনাথকে জিম্মি করে পরকিয়ার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে অমূল্য দেবনাথের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠে। এ অপকর্মের প্রতিবাদ করলে অমূল্য দেবনাথকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। সেই সাথে জমিজমা বিক্রি করে টাকা দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন আসামীরা। এরইমধ্যে তারা অনেক টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। বিষয়টি অমূল্য দেবনাথ আত্মীদের জানিয়ে রাখেন।
শিপ্রার কথাগুলো না শোনায় ও তার অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ায় ২৮ থেকে ২৯ নভেম্বরের মধ্যে অমূল্য দেবনাথকে ভাড়া বাসায় পরিকল্পনা মাফিক হত্যা করে আসামীরা। পরে হত্যাকে আত্মহত্যা চালিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।