নাবালিকা মেয়েটি পিতার কাছে যেতে রাজি না হওয়ায় তাকে শিশু সংশোধনাগারে প্রেরণের আদেশ দেন বিচারক
এসএম সুরুজ আলী ॥ বানিয়াচঙ্গের পশ্চিম হলদারপুর গ্রামে জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে অপহরণ ও গণধর্ষণ করা হয়েছে মর্মে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফেঁসে গেছেন পিতা। কথিত অপহৃত মেয়েটিকে উদ্ধার করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করেছে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঢাকার উত্তরখান থানাধীন মাদার বাড়ি জামতলাস্থ পারভেজ ইলিয়াস এর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন পিবিআই’র পুলিশ পরির্দশক মোক্তাদির হোসেন। উদ্ধারকৃত মেয়েটি বানিয়াচং উপজেলার হলদারপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ইসলামের কন্যা। উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায়, তার সৎ মা ও পিতার অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর চাকুরীর সন্ধানে তাদের এলাকার হুমায়ুন কবির নামের এক যুবকের সাথে ঢাকাস্থ উত্তরখান থানাধীন জামতলা মাদার বাড়ি এলাকায় যায়। সেখানে গিয়ে তাদের গ্রামের মোঃ শাহিন নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে পার্শ্ববর্তী “প্রমিজ ফুট ওয়্যার” নামের একটি জুতার কারখানায় ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে চাকুরী নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তাকে কেউ অপহরণ কিংবা ধর্ষণ করেনি।
পরে মেয়েটিকে আদালতে পাঠানো হলে সে আদালতে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে জবানবন্দি প্রদান করে। পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক মোক্তাদির হোসেন জানান, গত ১৮ অক্টোবর বানিয়াচং উপজেলার হলদারপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম আদালতে অভিযোগ করেন তার ১৪ বছর বয়সী নাবালিকা কন্যাকে একই গ্রামের হুমায়ূন কবির, রফিক আলী ও জুনু মিয়া গং শিবগঞ্জ বাজার থেকে আসার পথে মুখে কাপড় প্যাঁছিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। সেখানে তারা মেয়েটিকে অব্যাহত গণধর্ষণ করছে। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয় পিবিআইকে। পিবিআই মামলাটির তদন্তকালে জানতে পারে সিরাজুল ইসলামের সাথে একই গ্রামের হুমায়ূন কবির, রফিক আলী ও জুনু মিয়া গংদের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে তাদের ঘায়েল করার জন্য শত্রুতাবশতঃ অপহরণের নাটক সাজিয়ে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মেয়েটিকে উদ্ধারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে এর রহস্য উদঘাটন হয়।
ইন্সপেক্টর মোক্তাদির হোসেন বলেন- উদ্ধারকৃত মেয়েটি নাবালিকা হওয়ায় আদালত তাকে পিতার কাছে যাওয়ার কথা বললে মেয়েটি পিতার সাথে যেতে রাজি হয়নি। পরে বিচারক মেয়েটিকে গাজীপুর শিশু সংশোধনাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।