ভালবাসার ফুলে ফুলে ভরে উঠে সংবর্ধনা মঞ্চ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মশাজান এলাকায় খোয়াই নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটি সরু হওয়ায় বড় গাড়ি পারাপার হতে পারে না। একদিকে গাড়ি উঠলে অপরদিকে সৃষ্টি হয় যানজট। ফলে লস্করপুরবাসীকে জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে বেগ পোহাতে হয় অনেক। অথচ ওই ব্রীজটি প্রশস্ত ও বড় হলে ধুলিয়াখাল-মিরপুর সড়কটিকে কেন্দ্র করে লস্করপুর ইউনিয়নের অগ্রযাত্রা অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। দীর্ঘদিন যাবত এলাকাবাসী খোয়াই নদীতে বড় ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন সরকারের কাছে। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে লস্করপুরবাসীর।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নতুন বাজার মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হবিগঞ্জে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন করায় সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহিরকে লস্করপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রদত্ত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমপি আবু জাহির এই ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণায় উপস্থিত হাজার হাজার জনতার করতালীতে মুখরিত হয়ে উঠে সংবর্ধনা মঞ্চ। এমপি আবু জাহির এ সময় বলেন, পর্যায়ক্রমে চরহামুয়া এলাকায়ও আরেকটি ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও লস্করপুর ইউনিয়নের সকল রাস্তাঘাট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবশিষ্ট উন্নয়ন দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে এমপি আবু জাহিরকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় বরণ করে লস্করপুর ইউনিয়নবাসী। এমপি আবু জাহিরের বাসভবন থেকে ঘোড়ার টমটমের সাথে দশটি ঘোড়ার বহর এবং মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় এমপি আবু জাহির রওয়ানা হন সংবর্ধনা স্থলের উদ্দেশ্যে। মশাজান এলাকা থেকেই অর্ধশত তোরণের মাধ্যমে বরণ করা হয় এমপি আবু জাহিরকে। সাথে রাস্তার পাশে ছিল রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পরই দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের দেয়া ভালবাসার ফুল, ক্রেস্ট আর স্মারক উপহারে ভরে যায় মঞ্চ। অর্ধঘন্টাবাপি চলে এই ফুল প্রদান পর্ব। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি আবু জাহির এই ভালবাসায় আপ্লুত হয়ে বলেন, করোনাকালে আমি জীবন বাজী রেখে প্রতিটি এলাকায় ছুটে গিয়েছি। লোকজনকে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করেছি। নামাজ, ঘুম এবং খাওয়া ছাড়া সকল সময় আমি জনগণের জন্য ব্যয় করেছি। মৃত্যুর পর মানুষ আমাকে কতটুকু স্মরণ করবে তা হয়তো বলতে পারব না। তবে করোনা আক্রান্ত হয়ে যখন হাসপাতালের বিছানায় তখন হবিগঞ্জের প্রতিটি এলাকার মানুষ যেভাবে আমার জন্য প্রার্থনা করেছেন তার প্রতিদান দেয়ার জন্যই আমি দিনরাত কাজ করে যেতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আপনারা আমাকে বার বার সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে যাচ্ছেন। আমি এই সম্মান পাওয়ার যোগ্য নই। আপনাদের ফুলের তোড়া আপনাদেরকে ফিরিয়ে দিতে চাই। কারণ আপনারা ভোট না দিলে আমি কাজের সুযোগ পেতাম না। সে হিসেবে সকল উন্নয়নের কৃতিত্ব আপনাদেরই।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী নূরুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান হিরোর পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ মোত্তালিব ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।
আরও বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট সৈয়দ আফজাল আলী দুদু, অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মুকিত, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল, জাহেদুর রহমান, মকসুদ আলী, মোহাম্মদ আলী মুন্সী, গোপায়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, সাবেক, নিজামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল তালুকদার, জেদ্দা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া চৌধুরী, জেলা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নওশের আলী, সদর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, শ্রমিক লীগ নেতা লিটন মিয়া, সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির আহমেদ রনি ও আব্দুল হাই প্রমুখ।
সংবর্ধনায় বক্তারা এমপি আবু জাহির’র দূরদর্শী চিন্তায় হবিগঞ্জে ঘটে যাওয়া অভুতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ডের বর্ণনা দেন এবং কৃতজ্ঞতা জানান অভাবনীয় দুই প্রতিষ্ঠান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ বাস্তবায়নের জন্য। তারা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীতে উন্নয়নের রেকর্ড গড়েছেন এমপি আবু জাহির। হবিগঞ্জবাসীর স্বার্থে তাঁকে বার বার নির্বাচিত করা প্রয়োজন।