কোরাম সংকটে নবীগঞ্জ উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা ও মাসিক সমন্বয় সভা ॥ বড় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই মিটিং সমাপ্ত

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভা কোরাম ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভার ২১ জন সদস্যের মধ্যে ৮ জন উপস্থিত হওয়ায় বড় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই সমাপ্ত হয়েছে সমন্বয় সভা। সোমবার উপজেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ বিন হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম, ১নং বড় ভাকৈর ইউপি চেয়ারম্যান সত্যজিত দাশ, ২নং বড় ভাকৈর (পুর্ব) ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশিক মিয়া, ৩নং ইনাতগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ, ৭নং ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা ছাইম উদ্দিন ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাজু চৌধুরীসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ। এদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং কাজের বিল প্রদানে নানা টালবাহানা করার অভিযোগে সভায় যোগ না দিয়ে বর্জন করেছেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি পানিউন্দা ইউপি চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক গজনাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুর রহমান মুকুল, দীঘলবাক ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ এওলা, আউশকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন, কুর্শি ইউপি চেয়ারম্যান আলী আহমদ মুছা, বাউসা ইউপি চেয়ারম্যান আবু সিদ্দীক, দেবপাড়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন, কালিয়ারভাঙ্গা ইউপির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ৫ জন মহিলা সদস্য। এছাড়া সোমবার কোরাম সংকট নিয়েই মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিভক্তি দেখা দিয়েছে উপজেলা পরিষদে। এনিয়ে তুমুল আলোচনার ঝড় উঠেছে উপজেলার সর্বত্র।
উল্লেখ্য, নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের গেল জুন মাসের ৩য় মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেন ১৩টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ। তাদের অভিযোগ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের বিল প্রদানে নানা টালবাহানা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৪র্থ সভাও বর্জন করেন চেয়ারম্যানবৃন্দ। তবে ওই সভায় ৩ জন চেয়ারম্যান উপস্থিত হয়ে তারিখ পরিবর্তনের আহ্বান জানান। ফলে গতকাল সোমবার পুনরায় তারিখ নির্ধারণ হয়। কিন্তু চেয়ারম্যানদের অভিযোগের সমাধান না দিয়েই সমন্বয় সভা আহ্বান করায় চেয়ারম্যানগণ তাদের বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। অবশ্য বর্জনকারী ইউপি চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৫ জন উপজেলা চেয়ারম্যানের ডাকে সাড়া দিয়ে সভায় যোগদান করেন। বাকী ৮ জন চেয়ারম্যান ও ৫ জন মহিলা সদস্য তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। শেষ পর্যন্ত কোরাম সংকট নিয়েই সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ডেঙ্গু মশা নিধন ও চেয়ারম্যানদের সম্মানি ভাতা প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও বড় কোন প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি বলে সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাসিক সমন্বয় সভার সভাপতি তৌহিদ বিন হাসান জানান, জেনারেল কোরাম হয়েছে। এই কোরামে বড় কোন প্রকল্প বা প্রজেক্ট নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব না হওয়ায় শুধুমাত্র ডেঙ্গু মশা নিধন ও চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সম্মানির ভাতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, সংসদ সদস্যের প্রাপ্তবয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতার বিষয়ে এক সদস্য প্রস্তাব করলেও এ বিষয়ে ওই ফোরামে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বিধিসম্মত না হওয়ায় তা আর আলোচনা হয়নি। বড় কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে কমপক্ষে ১৩ জন সদস্য উপস্থিত থাকতে হবে। এখানে উপস্থিত হয়েছেন মাত্র ৮ জন। তবে জেনারেল কোরামে আপদকালীন ছোট ছোট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।
এদিকে চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি পানিউন্দা ইউপি চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান জানান, তাদের অভিযোগের সুষ্ঠু ও সম্মানজনক সমাধান না আসলে মাসিক সমন্বয় ও আইনশৃঙ্খলা সভা বর্জন অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সুইচ অফ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।