গত অর্থ বছরে হবিগঞ্জ পৌরসভা সেখানে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর শপিং মল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল

এসএস সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে হকার্স মার্কেটে আর পৌর শপিং মল নির্মাণ হচ্ছে না। সেখানে নান্দনিক পুকুর তৈরির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তবে হকার্স মার্কেটসহ এর আশপাশের ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্মুখভাগ ও নজির মার্কেটের সম্মুখভাগের মাঝখানের পুকুরটি ভরাট করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি পৌরসভার নিজস্ব আয়ের জন্য ১০ তলা বিশিষ্ট পৌর শপিং মল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল হবিগঞ্জ পৌরসভা। ওই শপিং মার্কেটে দোকান, ব্যাংক বীমা, অফিস ভাড়া দেয়ার পরিকল্পনা ছিল সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ¦ জি কে গউছের। হবিগঞ্জ পৌরসভার ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সাবেক মেয়র জি কে গউছ পৌর শপিং মল নির্মাণের জন্য ১০ কোটি টাকা ব্যয়বরাদ্দ ধরেন। পৌর পরিষদের সভায় শপিংমল নির্মাণের জন্য রেজুলেশন করা হয়। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেখানে মার্কেট নির্মাণ না করে নান্দনিক পুকুর তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, এখানে এক সময় পুকুর ছিল। কিন্তু ওই স্থানটি ভরাট করে পুকুরের সৌন্দর্য্য বিলীন করা হয়েছে। সরকার আবারও সেখানে নান্দনিক পুকুর তৈরির পরিকল্পনা করছে। সম্প্রতি হবিগঞ্জ শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি বলেন, হবিগঞ্জ শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে জেলা প্রশাসনের কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মিজানুর রহমান মিজান জানান, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করতে হকার্স মার্কেটসহ যেসব দোকান রয়েছে সেগুলো উচ্ছেদ করে সেখানে নান্দনিক পুকুর তৈরি করা হবে। ওই পুকুর পাড়ে ফুল গাছসহ বিভিন্ন গাছ-গাছালি লাগিয়ে সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা হবে। লোকজন পরিবার পরিজন নিয়ে বসে অবসর সময় কাটাতে পারবেন। পাশাপাশি এখানকার ব্যবসায়ীদের কিভাবে পুনর্বাসন করা যায়, সে ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও পৌর কর্তৃপক্ষ আরেকটি স্থান নিশ্চিতের জন্য পরিকল্পনা করছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছ দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে জানান, বাংলাদেশের সব পৌরসভার নিজস্ব ফান্ড বা তহবিল রয়েছে। রয়েছে তাদের নিজস্ব আয়ের ব্যবস্থা। কিন্তু হবিগঞ্জ পৌরসভার তা নেই। আমি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের কাছ থেকে বরাদ্দ এনে হবিগঞ্জ সাইফুর রহমান টাউন হল নির্মাণ করি। সেখানে অনেক দোকান তৈরি করি। পুরাতন বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ করি। পিটিআই’র সামনে কিচেন মার্কেট নির্মাণ করি। পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য পৌরসভার টাকা দিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জায়গা ক্রয় করি। কিন্তু নানা বাধার কারণে ডাম্পিং স্পট নির্মাণ করতে পারিনি। তিনি বলেন, ৩ বার নির্বাচিত হয়ে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে পৌরসভা ও পৌর এলাকায় আমুল পরিবর্তন এনেছি। এই পৌরসভার উন্নয়ন ও নিজস্ব ফান্ড তৈরি করার জন্য হকার্স মার্কেটে ১০ তলা বিশিষ্ট পৌর শপিং মল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এ মার্কেটটি নির্মাণ হলে যেমন কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হতো, তেমনি পৌরসভার আয়ের উৎস তৈরি হতো। পৌর শপিং মল নির্মাণ না হলে আয় বাড়বে না। যেহেতু সরকার সেখানে আর পৌর শপিং মল নির্মাণ করতে চায় না। এ নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। হবিগঞ্জকে নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে, যদি কখনও আমার দল ক্ষমতায় যায় তাহলে সেগুলো বাস্তবায়ন করবো।