কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না ॥ পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে

হবিগঞ্জের মুখ রিপোর্ট ॥ আগামীকাল সোমবার থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ বছর ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৯৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য তা পেছানো হয়। এদিকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া নিশ্চিত করতে পরীক্ষা কেন্দ্রের ২শ’ গজের মধ্যে জনসাধারণের অনধিকার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিধিনিষেধের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২০ সালের এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষা আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া নিশ্চিত করতে কেন্দ্রের ২শ’ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ব্যতীত জনসাধারণের অনধিকার প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ আদেশ ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনগুলোতে পরীক্ষা চলাকালীন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামীকাল সোমবার থেকে শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। আর ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চের মধ্যে এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হবে। দেশের নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য দাখিল পরীক্ষা ৩ ফেব্রুযারি শুরু হয়ে ১ মার্চ পর্যন্ত চলবে। ৮ মার্চের মধ্যে দাখিলের ব্যবহারিক পরীক্ষা নিতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হবে। ৭ মার্চ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে বাস্তব প্রশিক্ষণ।
চলতি বছর ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৯৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। গতবছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন। এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী কমেছে সাড়ে ৮৭ হাজার। গত বছরের থেকে চলতি বছর ৪৬ হাজার ৭৮ জন ছাত্র ও ৪১ হাজার ৪৭৬ জন ছাত্রী কমেছে।
জানা যায়, এ বছর সারা দেশে ১৬ লাখ ৩৫ হাজার ২৪০ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি, ২ লাখ ৮১ হাজার ২৫৪ জন পরীক্ষার্থী দাখিল এবং ১ লাখ ৩১ হাজার ২৮৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশ নেবে। চলতি বছর ৭ লাখ ৯১ হাজার ৯১৮ জন ছাত্র ও ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৩২২ জন ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবে। এ বছর ছাত্রদের তুলনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। ১৭ হাজার ৪৮২টি স্কুল থেকে এসব শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
সারা দেশে দাখিল পরীক্ষায় ২ লাখ ৮১ হাজার ২৫৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৩৮ জন আর ছাত্রী ১ লাখ ৪৭ হাজার ১১৬ জন। ৯ হাজার ১১০টি মাদরাসা থেকে এসব শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। দাখিলেও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রী সংখ্যা বেশি।
এদিকে এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১ লাখ ৩১ হাজার ২৮৫ জন। এদের মধ্যে ৯৮ হাজার ৩০৭ জন ছাত্র আর ছাত্রী ৩২ হাজার ৯৭৮ জন। ২ হাজার ২৯২টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব শিক্ষার্থী এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
ইতোমধ্যে শিক্ষা বোর্ড থেকে পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা তা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করবেন।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর প্রেক্ষিতে শিক্ষা বোর্ড, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যজিস্ট্রেটদের ছয় দফা নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে এসএসসি, দাখিল এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো শিক্ষার্থী দেরিতে কেন্দ্রে আসলে রেজিস্ট্রারের নাম, ক্রমিক নং ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে। দেরিতে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাবেন কেন্দ্র সচিব।
তাছাড়া কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে অননুমোদিত মোবাইল ফোন বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রত্যেক কেন্দ্রে একজন নির্বাহী কর্মকর্তা বা ম্যাজিস্ট্রেট (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ দিতে হবে। তারা ট্রেজারি বা থানা থেকে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তার প্রতিনিধিসহ প্রশ্ন গ্রহণ করে পুলিশ প্রহরায় পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। নির্বাহী কর্মকর্তা বা ম্যাজিস্ট্রেটের (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিতি ছাড়া প্রশ্ন বের করা যাবে না বলেও পরিপত্রে বলা হয়।