নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে পথচারীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে নবীগঞ্জ-শেরপুর রোডস্থ ছালামতপুর হাজারী কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভা চলাকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে ২০/২২টি মোটর সাইকেলসহ আসবাবপত্র এবং ১টি দোকান ভাংচুর হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সোমবার সকালে হাজারী কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক আরিফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জামিল হোসেন ও রায়হান উদ্দিন। সভার শুরুতেই ছাত্রনেতা জহিরুল ইসলাম সোহেলের গ্রুপের নেতাকর্মীরা মঞ্চের চেয়ার দখলে নেন। পরে ছাত্রনেতা রায়েছ চৌধুরীর নেতৃত্বে তার গ্রুপের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে বসার জায়গা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা অনুষ্ঠানের মঞ্চে আসলে উত্তেজনা আরো বেসামাল হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে সেন্টারের ভিতরেই চেয়ার নিয়ে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা মারামারি শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইর চলে যায়। শুরু হয় উভয়পক্ষের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষই দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি ইটপাটকেল ব্যবহার করে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন জুলন মিয়া (২৩), পাবেল মিয়া (২৭), শরীফুল ইসলাম জুনেদ (২৮), সাইফুর রহমান বাবু (২৩), পথচারী মুছন মিয়া (২৫) ও মহিম উদ্দিন (৭২)। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শরীফ আহমেদ আবিদ ও জুয়েল মিয়া নামে ২ জনকে আটক করে। তাদের বাড়ি হবিগঞ্জ শহরে বলে জানা গেছে। ভাংচুরকৃত ৭টি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও ছাত্রলীগের নেতা রাসেদ চৌধুরীর একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আজিজুর রহমান জানান, ছাত্রদলের কর্মীসভায় দুগ্রুপের সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শহরে সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, ২ জনকে আটক করা হয়েছে এবং সংঘর্ষে ভাংচুর হওয়া মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।