পিতার দাবি ইয়াছমিনকে হত্যা করে লাশ রান্নাঘরে গ্যাসের চুলার পাশে জানালায় ঝুলিয়ে রাখে তার স্বামী
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরতলীর পোদ্দারবাড়ি এলাকার রিভারভিউ খান ম্যানশনের ফ্ল্যাট বাসার ২য় তলা থেকে ইয়াছমিন আক্তার (২২) নামের এক যুবতী বধূর রক্তমাখা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর থেকে দুই শিশু সন্তানকে রেখে স্বামী পালিয়ে গেছে। নিহতের মা-বাবার দাবি তাকে যৌতুকের জন্য হত্যা করে লাশ রান্নাঘরে গ্যাসের চুলার পাশে জানালায় ঝুলিয়ে রাখা হয়। গতকাল শনিবার সকালে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
নিহত ইয়াছমিনের পিতা এখলাছ মিয়া জানান, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে তার কন্যা ইয়াছমিন আক্তারকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব তেঘরিয়া গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র রাজমিস্ত্রি জুয়েল মিয়ার (৩০) সাথে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে দুইটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। বিয়ের পর থেকেই শ^শুর-শাশুড়ি ও জামাতা প্রায়ই যৌতুকের জন্য তার কন্যাকে মারপিট ও নির্যাতন করতো। এক পর্যায়ে তার কন্যা ও জামাতা ওই বাসার ২য় তলা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিল। এরপরও পাষ- স্বামী তার উপর যৌতুকের জন্য নির্যাতনের মাত্রা বাড়াতে থাকে।
ইয়াছমিনের পিতা এখলাছ মিয়ার দাবি- শনিবার ভোর রাতে কোন এক সময় জুয়েল মিয়া ইয়াছমিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে রান্না ঘরে নিয়ে জানালার গ্রিলে উড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পুলিশকে খবর দেয়। সদর থানার ওসি মাসুক আলী, এসআই খুর্শেদ আলম ও সাব্বির আহমেদসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেন। ইয়াসমিনের দুইটি সন্তান ২ বছর বয়সী জিহাদ ও ৬ মাসের শিশু দিসান নানী শাহানার কোলে থেকে মা’য়ের অপেক্ষা করছিল। তারা বুঝতে পারেনি তাদের মা আর কোন দিন ফিরে আসবে না। এ প্রতিনিধি জিহাদকে তার মায়ের কথা জিজ্ঞাস করলে সে বলে ‘আম্মু আমার জন্য পরটা আনতে পোদ্দার বাগি গেছে।’ আক্ষেপ করে নিহত ইয়াছমিনের মা শাহানা ও বাবা এ প্রতিনিধিকে জানান, আমার কন্যাকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই। নিহত ইয়াছমিনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাসুক আলী জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যা। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তিনি জানান, এখনও অভিযোগ দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।