মোঃ আলাল মিয়া, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যসমেত গ্রামে গতকাল সন্ধ্যায় এক বখাটে এবং তার ভাই ও চাচার হামলায় কলেজ পড়–য়া কন্যাসহ মা-বাবা গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মতব্বির হোসেন (৫০) ও তার কন্যা রহিমা বেগমকে (১৭) নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহত মতব্বির হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগমকে (৪০) স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মতব্বির হোসেন জানান, তাদের একই গ্রামের গফুর মিয়ার পুত্র বখাটে জাইদুল মিয়া তার কলেজপড়–য়া কন্যা রহিমাকে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করতো। যে কারণে বাধ্য হয়ে রহিমা কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয়। ক্ষিপ্ত জাইদুলের নেতৃত্বে তার ভাই ছইদুল ও চাচা আঃ শহীদ গং গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মতব্বির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে প্রথমে তার কলেজপড়–য়া কন্যা রহিমাকে দেশীয় স্টীলের রুইল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে। চিৎকার শুনে বাড়িতে থাকা তার পিতা মতব্বির হোসেন ও মা জাহানারা বেগম মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেধড়ক মারপিট করে হামলাকারীরা। এতে রহিমাসহ তার পিতা-মাতা গুরুতর আহত হন। হামলাকারীরা এ সময় রহিমার গলা থেকে জোরপূর্বক একটি স্বর্ণের চেইন ও একটি এন্ড্রয়েট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, হতদরিদ্র মদব্বির হোসেনের কন্যা ইনাতগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী। কলেজে যাওয়া আসার সময় রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন ও উত্ত্যক্ত করতো ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যসমেত গ্রামের মৃত গফুর মিয়ার পুত্র সিএনজি অটোরিকশা চালক জাইদুল মিয়া। ঘটনাটি জাইদুলের অভিভাবকদের জানানোর পরেও কোন বিচার পাননি মতব্বির হোসেন। এমনকি বিচার দেয়ায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে জাইদুল। তার ইভটিজিং এর শিকার হয়ে ওই ছাত্রী কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এমনকি ওই ছাত্রীর পিতা মাতা বাড়িতে না থাকার সুযোগে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় জাইদুল। এ সময় জাইদুল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর বিভিন্ন ছবি মোবাইল ফোনে তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। তার চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে বড় বোন এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রীর পিতা মদব্বির হোসেন বাদী হয়ে জাইদুল হককে আসামী করে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ওই ছাত্রী জানায়, ইভটিজিং এর কারণে সে কলেজে যেতে পারে না। এমনকি তার ছবি ও নাম দিয়ে ফেসবুকে আইডি খুলে বিভিন্ন খারাপ ছবি পোস্ট করা হচ্ছে। এসব কারণে সমাজে মুখ দেখাতে পারছেন না তিনি। এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়।
বখাটের উৎপাতে কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে মেয়েটি
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com