স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ ৮ ডিসেম্বর আজমিরীগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্ত হয়েছিল তৎকালীন ভাটি বাংলার রাজধানী খ্যাত হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ থানা। মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা দিনগুলোর মধ্যে একটি দিন হল আজমিরীগঞ্জ মুক্ত দিবস। সেদিন পূর্বাকাশে সূর্যোদয়ের সাথে সাথেই মেঘনা রিভার ফোর্সের কোম্পানী কমান্ডার, ১১নং সেক্টরের ট্রেনিং ইনচার্জ ফজলুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ৭ ঘন্টা সম্মুখযুদ্ধ শেষে পাকিস্তানী সেনা, রাজাকার, আলবদরদের হটিয়ে মুক্ত করেন আজমিরীগঞ্জ উপজেলা। যুদ্ধের পর আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সদরে পাকিস্তানী সেনা, পুলিশ, আলবদর-রাজাকারদের বিতাড়িত করে বীরযোদ্ধাদের মুহর্মুহ গুলি ও জয় বাংলা শ্লোগানের মাধ্যমে বীরদর্পে এগিয়ে আসে কয়েক হাজার মুক্তিকামী জনতা। ফুলের মালা গলায় দিয়ে বরণ করে যুদ্ধকালীন কমান্ডার মোঃ ফজলুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। এ সময় আজমিরীগঞ্জ থানার প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফজলুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ঐতিহাসিক গরুরহাট ময়দান ও থানা কম্পাউডে উত্তোলন করা হয় কাঙ্খিত সেই বাংলাদেশের লাল সবুজের রক্তিম পতাকা। এসময় এফ আর চৌধুরীর সহযোদ্ধা অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন তৈয়বুর রহমান খান বাচ্চু, বৃটিশ সেনাবাহিনী সদস্য নুর ইসলাম মুন্সি, নেত্রকোনার সারফান আলী, আব্দুর রাজ্জাক মিয়া, আক্কাছ মিয়া, মর্তুজ আলী ওরফে চান মিয়া, সালাহউদ্দিন মিয়া, সিরাজ মিয়া, আব্দুস সোবহান, আক্কেল আলী, আব্দুল হাই, রমজান মিয়া, মুজিবুর রহমান, মিন্নত আলীসহ মেঘনা রিভার ফোর্সের সদস্য বিভিন্ন থানার ১শ ১৭ জন সম্মুখ সমর যোদ্ধা। পরে হাজারো জনতার আনন্দে উদ্বেলিত ভালবাসায় সিক্ত হয়ে কমান্ডার মোঃ ফজলুর রহমান চৌধুরী আবেগ জড়িত কন্ঠে স্বাধীনতা পাওয়া এবং চাওয়ার উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন। শুধু আজমিরীগঞ্জ থানাই নয় ফজলুর রহমান চৌধুরীর কমান্ডে বলিষ্ট নেতৃত্বে পাকিস্তানী হানাদার আলবদর রাজাকারদের হটিয়ে হবিগঞ্জ জেলার পাশ্ববর্তী ইটনা, অষ্টগ্রাম, নিখলী নেত্রকোনা জেলার তৎকালিন কমলাকান্দা, সুনামগঞ্জের বিশ^মভরপুর, থানা সম্মুখ সমরে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে মুক্ত করেন এবং শত সহ¯্র রাজাকার, আলবদর, পাকিস্তানী সেনা, পুলিশ মিলিসিয়া আত্মসমর্পণ করে ও নিহত হয়।