ফলোআপ

মোশাহেদ মিয়া, বানিয়াচং থেকে ॥ বানিয়াচঙ্গে প্রতিবন্ধীর ভাতা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ইউপি সদস্য সুমন আখনজী ও উপজেলা সমাজকর্মী রেজাউল হক রতনের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মামুন খন্দকার গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা সমাজকর্মী রেজাউল হক রতন ও ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য সুমন আখনজীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য (স্বারক নং ৫৮০) হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। প্রতিবেদনের অনুলিপি দেয়া হয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর ঢাকা, কমিশনার সিলেট বিভাগ, পরিচালক সমাজসেবা অধিদপ্তর সিলেট, উপ-পরিচালক, স্থানীয় সরকার, হবিগঞ্জ এবং উপ-পরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর হবিগঞ্জ এ। এদিকে একইদিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মামুন খন্দকার স্বাক্ষরিত পত্রে ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমানকে অভিযুক্ত ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুমন আখনজীর বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীর ভাতা ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় নৈতিক স্খলনজনিত কারণে ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৩৪(৪)(খ) ধারা মোতাবেক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে মর্মে পত্র প্রেরণ করেছেন। এমতাবস্থায় তাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোন প্রকল্পের দায়িত্ব প্রদানসহ সকল প্রকার দায়িত্ব প্রদান থেকে বিরত রাখার জন্য চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে লিখিতভাবে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এদিকে গতকাল হবিগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ১০১০নং স্মারকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমানও প্রতিবন্ধীর ভাতা ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে পত্র প্রেরণ করেন। ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করেন। এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে, ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ ডিসেম্বর বিকালে বানিয়াচং সোনালী ব্যাংক বড়বাজার শাখা থেকে ২৪ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা তুলেন সাগরদীঘি পাড় এলাকার আঃ সাত্তারের প্রতিবন্ধী মেয়ে মকসিনা আক্তার। ব্যাংক থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকের নীচে আসামাত্র সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী রেজাউল হক রতন ও ৩নং ইউনিয়নের মেম্বার সুমন আখনজী ওই প্রতিবন্ধীর কাছ থেকে পুরো ২৪ হাজার টাকা ও ভাতার বই ছিনিয়ে নেন। কিছুক্ষন পরে পুনরায় আবার ১১ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী মকসিনার মা ফুলজাহানের কাছে ফেরত দিয়ে অবশিষ্ট ১৩ হাজার টাকা ও ভাতার বই তাদের হাতে রেখে দেন। পরবর্তীতে প্রতিবন্ধী মেয়েটি তার বাবাকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মামুন খন্দকারের কাছে অভিযোগ করেন।