ইসলামের দৃষ্টিতে শালীনতার গুরুত্ব অপরিসীম। শালীনতা বলতে ব্যক্তির আচার-আচরণের প্রকাশ ভঙ্গি, যথা- ন¤্রতা, ভদ্রতা, সম্মান, ¯েœহ ইত্যাদি গুণাবলীকে বুঝায়। শালীনতা বোধ মানুষকে যে কোন ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজ হতে বিরত রাখে। একজন শালীন ব্যক্তি কখনো অন্যকে অসম্মান করে না। অন্যের অনিষ্ট করতে পারে না। একজন শালীন ব্যক্তির কাছে গোটা সমাজ নিরাপদে থাকে। আচার ব্যবহারে শালীন ব্যক্তিকে সবাই পছন্দ করে। পোষাক, পরিচ্ছদে শালীন ব্যক্তি সমাজে সৌন্দর্য্যরে প্রতিক। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) শালীনতাকে ইমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেছেন। মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট যার অশ্লীলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকেরা তাকে পরিত্যাগ করে (বুখারী)। উক্ত হাদিস থেকে সহজেই অনুমান করা যায় ব্যক্তি জীবনে শালীনতার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজকাল আমাদের সমাজে শালীনতার অভাব দেখা দিয়েছে। আজ সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে অশ্লীলতায় ভরে গেছে। পরিবার থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত শালীনতার এক মহাশূন্যতা দেখা দিয়েছে। আজ শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে ছাত্রছাত্রীর ভিতর থেকে শালীনতা উঠে গেছে। শিক্ষক তার ছাত্রছাত্রীদের প্রতি নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে না। এখন শিক্ষার পরিবেশ প্রায় কমার্শিয়াল। এমনকি বর্তমানে সন্তান পিতামাতার সাথে অশ্লীল আচরণ করছে। যার কারণে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র প্রতিনিয়ত নৈতিক অধঃপতনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। শালীনতার অভাবে যুবকদের মধ্যে ইভটিজিং এর আচরণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা বর্তমান সমাজের জন্য এক ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। শুধুমাত্র শালীনতার অভাবেই আমাদের সমাজে চুরি, ছিনতাই, খুন-রাহাজানিসহ নানা অপকর্ম চলছে। সন্তান যেন অশালীন আচরণে পথভ্রষ্ট না হয় সেজন্য মহান আল্লাহ্ তায়ালা হযরত লোকমান হাকিম (আঃ) তাঁর সন্তানগণকে যে সকল উপদেশ দিয়েছিলেন সেগুলো আমাদের সামনে পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। যেমন- হযরত লোকমান (আঃ) তাঁর পুত্রকে শালীনতা শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেন- ‘হে পুত্র অহংকারের বশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না, পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে চল না, কারণ আল্লাহ কোন উদ্ধত/অশালীন অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না। তুমি সদাচরণ করবে সংযতভাবে এবং তোমার কন্ঠস্বর নিচু করবে। নিশ্চয়ই স্বরের মধ্যে গাধার স্বর সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট। (সুরায়ে লোকমা, আয়াত নং- ১৯) উক্ত আয়াত থেকে সুস্পষ্ট প্রতিয়মান আল্লাহর কাছে শালীনতার গুরুত্ব গভীর। ব্যক্তির সুন্দর চরিত্র একমাত্র শালীনতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। আল্লাহ্পাক আমাদের সবাইকে আচার আচরণে ও পোশাক পরিচ্ছদে শালীনতার উপর অটুট রাখুন। অশ্লীলতা পরিবার ও সমাজ থেকে এবং রাষ্ট্র থেকে দূরীভূত হোক সেই কামনা করি। আমিন