মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণার চেষ্টা চালিয়েছে একটি চক্র। গত ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৪৬ মিনিটে শহরের শাইনিং স্টার মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ এবাদুল হাসান তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন। এই পোস্ট দেয়ার পর বিষয়টি সকলের নজরে আসে। এ নিয়ে সচেতন মহলে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সৈয়দ এবাদুল হাসান জানান, ২৪ নভেম্বর হঠাৎ ষাটোর্ধ এক ব্যক্তি তার স্কুলে এসে বলে আমি সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ চৌধুরী সাবের গাড়ির ড্রাইভার। তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন আপনার মোবাইল নম্বরটা নিতে। সৈয়দ এবাদুল হাসান সরল বিশ^াসে তাকে মোবাইল নম্বর লিখে দেন। পরে ওই ব্যক্তি তাকে নিজের নাম ও স্কুলের নাম লিখে দিতে বলে। সে এও বলে আমি অন্য আরো স্কুল থেকে তাদের নাম মোবাইল নম্বর নিয়ে এসেছি। তিনি সরল বিশ^াসে কাগজে তাও লিখে দেন। এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তির কথাবার্তায় বিষয়টি নিয়ে সৈয়দ এবাদুল হাসানের সন্দেহ হয়। তিনি শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে মোবাইল নম্বর নেয়ার ব্যাপারে জানতে চান। তখন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, তিনি কাউকে মোবাইল নম্বর আনতে কারো কাছে পাঠাননি। পরে সন্ধ্যায় তিনি এ ব্যাপারে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। যা দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকার পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল-
সাবধান হবিগঞ্জবাসি
অদ্য দুপুর ২. ১৫ মিনিটে ষাটোর্ধ ট্রাক ড্রাইভার পরিচয়ে জনৈক বৃদ্ধ লোক শাইনিং স্টারে এসে আমার সম্মুখে উপস্থিত। প্রয়োজন আমার মোবাইল নাম্বার। হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রেরণ করেছেন তাকে। এও নিশ্চিত হল আমার নাম সৈয়দ এবাদুর রহমান কি না ? সামান্য ভুল হলেও স্বীকার করলাম আমিই। এবং যথারীতি নাম সহ মোবাইল নাম্বার একটা কাগজে লিখে দিলাম এবং স্বসম্মানে প্রস্থান করার সুযোগ পায়। কিন্তু যাওয়ার পূর্বে তারাহুড়া এবং অতি কথনে সন্দেহ হলে ভাগ্নে নকিবের কাছ থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে শহীদ চাচাকে মোবাইল করে জানতে পারলাম ভোগাস। তিনি কাউকে কারো মোবাইল নাম্বার আনতে পাঠাননি। এবং আরো কয়েকস্থান থেকে এমনই প্রতারণার খবর পেয়েছেন। উনার নামে যেন কেহ দেনদেনে অংশগ্রহণ না করে তাও তিনি বললেন।
আমার মোবাইল নাম্বার এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নয়। তাই আমি যে চায় তাকেই প্রদান করে থাকি। কিন্তু লোকটির মিথ্যাচার এবং আচরণে আমার সন্দেহ হয় যে তার মতলব কোনভাবেই সৎ নয়। তাই হবিগঞ্জবাসী প্রতারক চক্র থেকে সাবধান।
এ ব্যাপারে শহরের এম আলী কেজি এন্ড হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ মোসাদ্দর আলী জানান, ৩দিন পূর্বে এক বৃদ্ধ লোক নিজেকে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর গাড়ির ড্রাইভার পরিচয় দিয়ে বলে, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী তাকে পাঠিয়েছেন তার নাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম এবং মোবাইল নম্বর লিখে দিতে। কারণ জিজ্ঞেস করলে সে জানায় তিনি অনুদান দেবেন এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সাহায্য সহযোগিতা করবেন। বৃদ্ধের কথায় বিশ^াস করে তিনি সব তথ্য কাগজে লিখে দেন। পরে তিনি বিষয়টি মাতৃছায়া কেজি এন্ড হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বন্ধু মঙ্গল রায়কে অবহিত করে এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন কি না জানতে চান। তখন বন্ধু মঙ্গল রায় তাকে জানান এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি হবিগঞ্জের মুখকে জানান, বিষয়টি তিনি শাইনিং স্টার মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ এবাদুল হাসানের কাছ থেকে শুনেছেন। তিনি কাউকে কোন ব্যক্তির মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতে পাঠাননি। এছাড়া যে ব্যক্তি এ রকম করেছে তাকে সনাক্ত করতে না পারায় তার বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থাও নিতে পারছেন না। এ ব্যাপারে তিনি সবাইকে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেন। পাশাপাশি কেউ এ রকম প্রতারণা করতে চাইলে তাকে জানাতে অথবা আইন প্রয়োগকারি সংস্থাকে অবহিত করতে অনুরোধ জানান।