স্টাফ রিপোর্টার ॥ উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলেই হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের টেন্ডার দুর্নীতি তদন্তে নামবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হবিগঞ্জ এর উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে জানান, হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের দুর্নীতি হয়েছে মর্মে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে আমরা জেনেছি। আমরা পত্রিকার পেপার কাটিং দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাঠাবো। প্রধান কার্যালয় থেকে আমাদেরকে এ বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দিলে আমরা মেডিকেল কলেজে গিয়ে তদন্ত করবো।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ একেএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ। এখানে আমাদের ব্যবস্থা নেয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই তদন্ত কমিটিতে আমাদের রাখলে আমরা কমিটির সাথে তদন্ত করতে পারবো।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ নিয়ে মিডিয়া যে সংবাদ প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোন নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। নির্দেশনা পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। এদিকে মেডিকেলের টেন্ডার দুর্নীতির সংবাদ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে। এ নিয়ে বিভিন্নজন বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বইপত্র, সাময়িকী, যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয়ের জন্য ২০১৮ সালে দরপত্র আহবান করা হয়। এ লক্ষ্যে কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ আবু সুফিয়ান স্বাক্ষরিত আদেশে ফিজিওলজি বিভাগের প্রভাষক ডাঃ মোঃ শাহীন ভূইয়াকে সভাপতি করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট বাজার দর যাচাই বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। দরপত্রে অংশ নেয় ৭টি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু মূল্যায়ন রিপোর্টে সদস্যদের স্বাক্ষর ছাড়াই ঢাকার শ্যামলী এলাকার বিশ্বাস কুঞ্জছোঁয়া ভবনের ‘নির্ঝরা এন্টারপ্রাইজ’ ও মতিঝিলের মঞ্জুরি ভবনের পুনম ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে দুটি প্রতিষ্ঠানকে মালামাল সরবরাহের দায়িত্ব দেয়া হয়।
সূত্র জানায়, বরাদ্দ ছিল ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ভ্যাট ও আয়কর খাতে সরকারি কোষাগারে জমা হয় ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ৯৭ হাজার ৭৪৮ টাকা। মালামাল ক্রয় বাবত ব্যয় দেখানো হয় ১৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮১ হাজার ১০৯ টাকা। কিন্তু বাস্তবে ওই মালামালের মূল্য ৫ কোটি টাকার বেশি নয়, এমনটাই বলছে দরপত্র প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র। বাকি টাকার পুরোটাই ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।