হবিগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের মতবিনিময়

হাসপাতালের ডাক্তার সংকট নিরসন ও দালালমুক্ত করা, নদী নালা অবৈধ দখলদারদের তালিকা নদী কমিশনে প্রেরণ, অবৈধ টমটম চলাচল বন্ধ করা, শিল্পবর্জ্য দূষণ থেকে সুতাং নদী রক্ষা, সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধসহ পরিচ্ছন্ন হবিগঞ্জ গড়তে সাংবাদিকদের পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ^াস দিলেন জেলা প্রশাসক

মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক অমিতাভ পরাগ তালুকদারসহ স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা অংশ নেন।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকরা পুরাতন খোয়াই নদীর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযানের উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং উচ্ছেদ অভিযান চলমান রাখতে নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের প্রতি আহবান জানান। এ ছাড়া বক্তাগণ শহরের যানজট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে জেলা প্রশাসকের প্রতি অনুরোধ করেন। তারা বলেন, পুরাতন খোয়াই নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও খোয়াই প্রতিরক্ষা বাঁধের দখলদার উচ্ছেদ করে সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক সকল মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তারা নতুন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বপ্নের বাস্তবায়ন চান। চান যানজটমুক্ত হবিগঞ্জ শহর। দিনের বেলা শহরের ভেতর দিয়ে বাস চলাচলে বিধি নিষেধ থাকলেও দেখা যায় প্রায়ই শহরের ভেতর দিয়ে বাস চলাচল করে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। দিনের বেলা শহরের ভেতর দিয়ে বাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ, অশ্লীলতা, ইভটিজিং, অরাজকতাসহ অপরাধ প্রবণতা প্রতিরোধে হবিগঞ্জ শহরকে সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, হবিগঞ্জের নদী নালা অবৈধ দখলদারদের তালিকা নদী কমিশনে প্রেরণ, হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ডাক্তার সংকট নিরসন ও দালালমুক্ত করতে ভূমিকা, জেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ দখলদারদের কবলে থাকা রাস্তা উদ্ধার এবং রেলের টিকেট কালোবাজারী রোধ, সৌন্দর্য্য বর্ধনে গুরুত্ব না দিয়ে ব্যাকরোডে ভাঙ্গাচোরা রাস্তা মেরামত, পাশাপাশি শিল্পবর্জ্য দূষণ থেকে সুতাং নদী রক্ষা, লাইসেন্সবিহীন প্রাইভেট হাসপাতালের অনিয়ম দূরীকরণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, সাংবাদিকদের সাথে প্রতি তিন মাস পরপর মতবিনিময়, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ স্থাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান প্রতিরোধ, মাধবপুর, চুনারুঘাট ও বাহুবলের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকাসহ মহাল থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধসহ নানা মতামত তুলে ধরে এসব ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসকের প্রতি আহবান জানান সাংবাদিকবৃন্দ।
জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, প্রতি ৩ মাস অন্তর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করা হবে। তিনি হবিগঞ্জে চলমান উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে পরিচ্ছন্ন, দুর্নীতিমুক্ত হবিগঞ্জ ও চোরাচালান-কালোবাজারী প্রতিরোধে সাংবাদিকসহ সকল মহলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হারুনুর রশিদ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি ও দৈনিক খেয়াই সম্পাদক শামীম আহছান, সাবেক সভাপতি ও প্রতিদিনের বাণী সম্পাদক মোহাম্মদ শাবান মিয়া, সাবেক সভাপতি ও হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস সম্পাদক মোঃ ফজলুর রহমান, সাবেক সভাপতি ও বাংলাভিশন প্রতিনিধি মোহাম্মদ নাহিজ, সাবেক সভাপতি ও হবিগঞ্জ সমাচার সম্পাদক গোলাম মোস্তফা রফিক, সাবেক সভাপতি ও দৈনিক দেশ রূপান্তর প্রতিনিধি শোয়েব চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চ্যানেল আই প্রতিনিধি চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ, মাছরাঙ্গা টিভি প্রতিনিধি চৌধুরী মাসুদ আলী ফরহাদ, ইন্ডিপেনন্ডেন্ট টিভি প্রতিনিধি আবু সালেহ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান চৌধুরী, সাপ্তাহিক জনতার দলিল সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ উদ্দিন মামুন, দৈনিক জনকণ্ঠ প্রতিনিধি রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন, ’৭১ টিভির হবিগঞ্জ প্রতিনিধি শাকিল চৌধুরী, ভোরের কাগজ প্রতিনিধি সফিকুল আলম চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ ফখরুজ্জামান, দৈনিক আয়না সম্পাদক রাশেদ আহমদ খান, যমুনা টিভি প্রতিনিধি প্রদীপ দাশ সাগর, চ্যানেল ২৪ প্রতিনিধি রাসেল চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী মমিন।