
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে বিজয়া দশমীর রাতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব। ম-পে ম-পে বিদায় ও বিষাদের ধ্বনি বাজিয়ে প্রতীমা বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে। ২৮ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব উদযাপন শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে শহরের খোয়াই মুখ ও মাছুলিয়া ঘাটলায় প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই ট্রাকযোগে প্রতিমা নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে ঘাটলায় নিয়ে যাওয়া হয় বিসর্জনের জন্য। ট্রাকযোগে প্রতিমা নিয়ে শহর প্রদক্ষিণকালে রাস্তার দু’পাশে নারী-পুরুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মতে এবার দেবী দুর্গার আগমন ঘটে গজে অর্থাৎ হাতির পিঠে চড়ে। গজে আগমন বা গমন হলে পৃথিবী শস্য-শ্যামলা হয়। আর দশমীতে দেবীর প্রস্থান ঘটেছে দোলায় চড়ে।
এর আগে, দশমীর দিনে ম-পে ম-পে দেবী দুর্গাকে সিঁদুর দেওয়ার মাধ্যমে সিঁদুর খেলায় মাতেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এ সময় সব অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভ শক্তির বিকাশের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রার্থনা করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সংঘের উদ্যোগে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। দর্পণ বিসর্জন আর দেবী আরাধনায় শেষ হয় দশমীর আচার-অনুষ্ঠান।
বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। র্যাব, সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থেকেছেন। এছাড়াও পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব যেন নির্বিঘেœ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পূজার সার্বিক নিরাপত্তায় চালু ছিল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও হটলাইন নম্বর। পাড়া-মহল্লায় পরিবেশ ঠিক রাখতে ড্রোন উড়ানোর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিংয়ে নিয়োজিত ছিল মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার টিম।
বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এবার হবিগঞ্জ জেলায় ৬৬১টি ম-পে উদযাপিত হয়। গত বছরের তুলনায় এবার পূজাম-পের সংখ্যা ১৮টি বৃদ্ধি পায়। যা জেলার উৎসবের আমেজকে আরও বাড়িয়ে তুলে।
পূজাকে ঘিরে জেলার প্রতিটি প্রান্তে পূজারি ও ভক্তদের মাঝে উৎসবের এক ভিন্ন আমেজ বিরাজ করে। জেলাজুড়ে ৬৬১টি ম-পের মধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪১টি, হবিগঞ্জ পৌরসভায় ৩৬টি, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ও পৌরসভায় ১৯টি, আজমিরীগঞ্জে ৩৫টি, মাধবপুরে ১১৫টি, চুনারুঘাটে ৮৫টি, নবীগঞ্জে ৯৩টি, লাখাই উপজেলায় ৬৬টি, বাহুবলে ৫২টি এবং বানিয়াচং উপজেলায় সর্বোচ্চ ১১৯টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।