পুলিশের অভিযানে ৪ দালাল গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরে ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দিয়ে তরুণীকে গণধর্ষণ করেছে ৪ দালাল। ২০ ঘণ্টার মধ্যে সদর থানা পুলিশ সাড়াশি অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। এরকম একটি উদ্যোগ নেয়ায় সদর থানা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছে শহরবাসী। গ্রেফতারকৃতরা হলো, শহরের মোহনপুর এলাকার শুক্কুর মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া (৩৫), দুর্লভপুর গ্রামের রাজু মিয়ার ছেলে জাফর আলী (৪৫), সুলতান মাহমুদপুর গ্রামের ছাবেদ আলীর ছেলে জাবেদ মিয়া (৩০) ও লোকড়া গ্রামের সহিদ মিয়ার ছেলে আবুল কাশেম (৩৫)।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশৈংকল উপজেলার মহলবাড়ি গ্রামের মুজিবুর রহমানের কন্যা নির্যাতিতা তরুণী এ প্রতিনিধিকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শাকিল মিয়ার সাথে তার পরিচয় হয়। এ সুযোগে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে শাকিল মিয়া তাকে ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেয়। সে তার স্বামীকে না জানিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা ক্যানন্টমেন্ট এলাকাস্থ স্বামীর বাসা থেকে বাসযোগে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ আসে। সেখান থেকে দুপুরে ৪ দালাল তাকে হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে আসে এবং ছবি, আইডি নিয়ে পাসপোর্ট আবেদন তৈরি করে। পরে জানায়, অফিস বন্ধ হয়ে গেছে কাল জমা দিবে। সন্ধ্যা হয়ে গেলে দালালরা মোহনপুরে শাকিলের বাসায় নিয়ে যায় ওই তরুণীকে। সেখানে কোনো কিছু করতে না পেরে তাকে ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে দুর্লভপুর গ্রামে এক পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ৪ জন তাকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে দুর্লভপুরের রাস্তায় রেখে পালিয়ে যায় তারা। এক পর্যায়ে কয়েকজন পথচারী তাকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করে বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি দোকানে রেখে যায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তার জবানবন্দি শুনে সদর থানার ওসি একেএম শাহাবুদ্দিন শাহীন মামলা রুজু করে কোর্ট স্টেশন ফাঁড়ির ইনচার্জ মফিজুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। তিনি ও এএসআই জাহাঙ্গীর আলম অভিযান চালিয়ে ৪ দালালকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতরা ঘটনা স্বীকার করেছে বলে জানায় পুলিশ। অসুস্থ ওই নারী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাকে ডাক্তারী পরীক্ষা ও জবানবন্দি শেষে জিম্মায় দেয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত ৪ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি শাহাবুদ্দিন শাহীন জানান, পুলিশ সকল আসামিকে গ্রেফতার করেছে। তারা ঘটনার কথা স্বীকার করেছে।