
স্টাফ রিপোর্টার ।। হবিগঞ্জে রিমান্ড শুনানির জন্য হাজির করার সময় আদালতের বারান্দায় স্কুলছাত্র জনি হত্যা মামলার আসামী সাজু মিয়ার উপর হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা। আদালত এ হত্যা মামলার একমাত্র আসামী সাজুর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জ শহরের চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র জনি দাশ হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত একমাত্র আসামী সাজু মিয়ার রিমান্ড শুনানির জন্য হবিগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। স্কুলছাত্র জনি দাশ খুনের ঘটনায় তার সহপাঠী ও স্বজনরা এতটাই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন যে, আসামীকে আদালতে হাজির করার সময় বারান্দায় দরজার সামনে তারা হঠাৎ করে পুলিশ ডিঙ্গিয়ে তার উপর হামলা চালায়। তাৎক্ষণিক পুলিশ দ্রুততার সাথে তাকে আদালতের ভিতরে ঢুকে রক্ষা করেন।
পরে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাঁকন দে (অসীম) এর আদালতে তার ৮ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। বিজ্ঞ বিচারক শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। হবিগঞ্জের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ আরো জানান, হামলাকারীরা আদালতের হাজতখানার কলাপসিবল গেইট ভেঙ্গে আসামীকে মারতে চেয়েছিল। এ সময় তিনিসহ কয়েকজন আইনজীবী মিলে পুলিশকে সহায়তা করে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই ভোররাতে জনি দাশ ও তার বড় ভাই জীবন দাশ জয় নিজ বাসায় চুরি করতে আসা এক ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন। এ সময় ওই ব্যক্তি তাদের উপর ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জনিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত জনি হবিগঞ্জ শহরের ডাকঘর এলাকা¯’ দেয়ানত রাম সাহার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা। চলতি বছর সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। আজ তার ফল প্রকাশের কথা। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৭ জুলাই বিকেলে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান জানান, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজু মিয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তবে এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ছিল না, চুরির উদ্দেশ্যেই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় বলেও জানান তিনি। এ মামলায় আর কেউ জড়িত নয়। সে নিজেই হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। সাজু মিয়া আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা ইউনিয়নের পশ্চিমবাগ গ্রামের মৃত খোশমান মিয়ার ছেলে। সে হবিগঞ্জ শহরের নাতিরাবাদ এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতো। এ ঘটনায় নিহত জনির বাবা নরধন দাস বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।