স্টাফ রিপোর্টার ।। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর হবিগঞ্জ সদর উপজেলার টেকনিশিয়ান (উদ্যোক্তা) শাহীনুর কামাল শাহীনের দুর্নীতি অনিয়মের আরো তথ্য বের হয়ে আসছে। শাহীন ইউএনও কার্যালয়ে চুক্তি ভিত্তিক (অ¯’ায়ী) টেকনিশিয়ান উদ্যোক্তা পদে ১২ বছর চাকুরী করে হয়েছেন গাড়ী, বাড়িসহ কোটি টাকার মালিক। উদ্যোক্তা পদে চাকুরী করলেও ইউএনও কার্যালয়ের সকল দপ্তরে রয়েছে তার নিয়ন্ত্রণ। কোন কর্মকর্তা তার অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পান না। কেউ মুখ খুললে তাদেরকে পিঠিয়ে শায়েস্তা করেন শাহীন। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টারে এক নারীর উপর হাত তুলেন শাহীন। যার ভিডিও সাংবাদিকদের কাছে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে কোয়ার্টার রুম দখল করে বসবাস করছেন শাহীন। সেখানে তার গাড়ীও রাখছেন। এসব বিষয়ে ইউএনও জেনেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যব¯’া নি”েছন না। অল্প টাকা বেতনে চাকুরী করে শহরে বাসা জায়গা রেখেছেন শাহীন। শুধু শহরে নয়, তার শ্বশুরবাড়িসহ নিজ বাড়িতে জায়গা ক্রয় করেছেন তিনি। তার দামী মোটর সাইকেলসহ ৫টি গাড়ী রয়েছে। সদর ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসকের বরাবর ৩ জুলাই একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ টেকনিশিয়ান উদ্যোক্তা শাহীনুর কামাল শাহীনের হাতে। শুধু নিয়ন্ত্রণ নয়, সরকারী গোপন নথিপত্র ব্যব¯’াপনা দাপ্তরিক “ইউএনও” অফিসের প্রশাসনিক “ইউজার আইডি-পাসওয়ার্ড কম্পিউটার ব্যবহারের পাশাপাশি ইউএনওর ব্যক্তিগত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের ইউজার আইডি-পাসওয়ার্ড অবৈধভাবে ব্যবহার করে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করছেন টেকনিশিয়ান শাহীন। উপজেলা দাপ্তরিক নথিপত্রের হস্তক্ষেপ করে গোপনীয় বিভিন্ন প্রতিবেদন, রিপোর্ট, দরপত্র প্রকাশ, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধি ভাতা এবং যুব-উন্নয়নের আওতায় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নি”েছন শাহীন। ইউএনও কার্যালয়ের আগত জন্ম ও মৃত্যু নিববন্ধন সংশোধনের সেবা গ্রহণকারী সংশোধনী আবেদন নিয়ে গেলেই নগদ ও বিকাশে টাকা দিতে হয় শাহীনকে। টাকা না দিলে তার খেয়াল-খুশিমোত টালবাহানা করে মানুষকে করেন শাহীন।
ইউএনও অফিসে চুক্তিভিত্তিক কাজ করে সরকারি কোয়ার্টারে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে রাজকীয়ভাবে বসবাস করছেন শাহীন। গোপায়া ইউনিয়ন পরিষদের নিকটসহ শ্বশুরবাড়ি টুপিয়াজুড়ীতে তার নিজ ও স্ত্রীর নামে গড়ে তুলেছেন সম্পত্তি। পাশাপাশি রয়েছে ২টি মাইক্রোবাস, ২টি ট্রাক ও ১টি পালসার মোটর সাইকেল। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যব¯’া নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ভুক্তভোগী রাহাত বিনতে রনি, শাহ আলম, সুমন মিয়া, হৃদয় মিয়া, খোকন মিয়া, পারভেজ মিয়া, কালাম মিয়া, মামুন মিয়া, সুবোধ কান্তি দাশ, শুভ ঘোষ, জমির আলী, কাউছার মিয়া ও মানিক মিয়া এ অভিয়োগ দায়ের করেন। অভিযোগের বিষয়ে উদ্যোক্তা শাহীনুর কামাল শাহীনের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি জানান, ইউএনও’র সাথে কথা বলে এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন।