স্টাফ রিপোর্টার ॥ গতকাল বুধবার হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন খোয়াই নদীতে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে পাকা, আধাপাকা বাড়িঘরসহ অবৈধ স্থাপনাগুলো। দখলদারদের অনেকেই নিজেরা নিজেদের স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলেছেন। গতকাল অভিযানের তৃতীয় দিনে শহরের দক্ষিণ অনন্তপুর ও শায়েস্তানগর বাগান বাড়ি এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিকেলে অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ অভিযানের স্থান পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। আজ সকাল থেকে সারাদিন বাগান বাড়ি এলাকার অবৈধ স্থপনাগুলো উচ্ছেদ করা হবে।
উচ্ছেদ অভিযানে শহরবাসীর মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। শহরের শত শত মানুষ ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে দিনভর এ উচ্ছেদ দেখছেন। অপরদিকে বিভিন্ন এলাকার অবৈধ দখলকারীদেরও কেউ কেউ গিয়ে আগ্রহ নিয়ে এ কার্যক্রম দেখছেন। তারা এখনও আশায় রয়েছেন হয়তো শেষ পর্যন্ত এ উচ্ছেদ নাও চলতে পারে। হয়তো তারা পার পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এ বিষয়ে ইতিপূর্বে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ ঘোষণা দিয়েছেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। পুরোনো খোয়াই নদীর এক ইঞ্চি ভূমি অবৈধ দখলে থাকা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
জানা গেছে, হবিগঞ্জ শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া খোয়াই নদী এক সময় জেলা শহরের দুঃখের অন্যতম কারণ ছিল। নদীতে সামান্য পানি এলেই ভেসে যেতো পুরো শহর। ডুবে যেতো মানুষের বাড়িঘর। আবার বড় বড় নৌকাও চলতো এ নদী দিয়ে। শহরবাসীর এ দুঃখ লাঘবের উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত দুই দফায় ৫ কিলোমিটার এলাকা নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হয়। আর তখন থেকেই দফায় দফায় নদীটি দখল করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। কিন্তু নদীটি উদ্ধারের দাবিতে জেলা শহরবাসী বিভিন্ন সময় আন্দোলন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কয়েকবার শুধু নদীর সীমানা নির্ধারণের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল। মাঝে মাঝে শুধু দু’য়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু সাথে সাথেই সেখানে আবার অন্যদল এসে দখল করে নিয়েছে। বিশাল স্থাপনা নির্মাণ করে কেউ বসবাস করছে, কেউ ভাড়া গুনছে, আবার কেউ তা বিক্রি করে দিয়েছে। অবশেষে জেলা প্রশাসন শহরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত খোয়াই নদীটি উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে বিশাল বিশাল অট্টালিকা।