হবিগঞ্জের মুখ রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকার সঠিক মাপ নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষার্থীদের মনে পতাকার সম্মানবোধ জাগ্রত করার লক্ষ্যে আগামী ২ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জে উদযাপিত হবে পতাকা উৎসব। এই পতাকা উৎসব সফল করতে হবিগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সময়ে স্ব স্ব উপজেলায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর।
চুনারুঘাট থেকে আবুল কালাম আজাদ জানান, হবিগঞ্জ জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে আগামী ২ সেপ্টেম্বর সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা বিতরণ ও পতাকা উৎসব পালন করা হবে। এ হিসেবে চুনারুঘাট উপজেলায় প্রায় আড়াইশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সঠিক মাপের পতাকা তুলে দেওয়া হবে। প্রতিদিন নিয়মানুসারে সঠিকভাবে পতাকা উত্তোলন এবং নামানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়। জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হলে জেল জরিমানার বিধানও রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে চুনারুঘাট উপজেলা সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন ইকবাল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা খাতুন, লুৎফুর রহমান মহালদার, পৌর মেয়র নাজিম উদ্দিন, অফিসার ইনচার্জ শেখ নাজমুল হক। এতে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, বিভাগীয় কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় জানানো হয়, আগামী ২ সেপ্টেম্বর জেলার ১ হাজার ৫শ ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে এক মাপের ও রংয়ের জাতীয় পতাকা বিতরণ করা হবে। ওইদিন সকল প্রতিষ্ঠানে পতাকা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে ২০ ফুট উচ্চতার একটি পাইপ এবং বিদ্যালয়ের সামনে একটি বেদি তৈরি করতে হবে। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়েছে। যাতে করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই মাপের এবং সঠিক মাপের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
নবীগঞ্জ থেকে সাদিকা তাসনিম জানান, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের জাতীয় পতাকা বিতরণ উৎসব সফল করতে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা হলরুমে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসানের সভাপতিত্বে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- নবীগঞ্জ উপজেলার ২৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় পতাকা বিতরণ শুরু হবে। তিনি আরো জানান, সঠিকভাবে জাতীয় পতাকার মাপ ও রং বজায় রাখতে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জাতীয় পতাকা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ নিয়েছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ।
লাখাই থেকে নিতেশ দেব জানান, লাখাই উপজেলায় ১শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পতাকা উপহার দিবেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। আগামী ২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ভিডিও কনফারেন্স মাধ্যমে ১ হাজার ৪শত ৬০টি পতাকা একযোগে সকল উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণের উদ্বোধন করবেন। এই পতাকা উৎসবকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় প্রেস ব্রিফিং করেন লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ শাহীনা আক্তার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্চিতা কর্মকার, উপজেলা পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাসুম, লাখাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম আলম, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন কুমার দে সহ সাংবাদিকবৃন্দ। লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ শাহীনা আক্তার জানান, একই সময়ে একযোগে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানদের প্রধানদের হাতে পতাকা হস্তান্তর করবেন। সেই হিসাবে লাখাই উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের হাতে ১শটি পতাকা বিতরণ করা হবে। প্রতিটি পতাকার সাইজ ও রং একই। পতাকার দৈর্ঘ্য ৫ ফুট এবং প্রস্ত ৩ ফুট। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে এই পতাকা উত্তোলনের জন্য তারা ১০ ফুট উচ্চতার একটি এসএস পাইপ ক্রয় করতে এবং পতাকা উত্তোলনের জন্য প্রতিষ্ঠানের সামনে একটি বেদী তৈরি করতে।
শায়েস্তাগঞ্জ থেকে মোঃ মামুন চৌধুরী জানান, জাতীয় পতাকার সঠিক মাপ নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষার্থীদের মনে পতাকার সম্মানবোধ জাগ্রত করার লক্ষ্যে আগামী ২ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জে উদযাপিত হতে যাচ্ছে পতাকা উৎসব। ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমী আক্তার। তিনি জানান, শায়েস্তাগঞ্জসহ জেলার ৯টি উপজেলার ১ হাজার ৫শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে জাতীয় পতাকা বিতরণ করা হবে। এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বক্তব্যে ইউএনও সুমী আক্তার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যুগান্তকারি এ কর্মসূচিকে সফল করতে সবার প্রতি আহবান জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মজিবুর রহমান, উপজেলা অফিসের সিও ইমাংশু চন্দ্র ঘোষ, নাজির মোঃ উস্তার মিয়াসহ বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ।
বানিয়াচং প্রতিনিধি জানান, আগামী ২ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলায় ১ হাজার ৪৪০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পতাকা উপহার দিবেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। এরই ধারাবাহিকতায় বানিয়াচং উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা বিতরণ উপলক্ষে বানিয়াচংয়ে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে প্রেসব্রিফিং করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলা হলরুমে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসব্রিফিংয়ে ইউএনও মামুন খন্দকার জানান, ওইদিন বানিয়াচং উপজেলার প্রায় ২১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের হাতে জাতীয় পতাকা বিতরণ করা হবে।
ইউএনও মামুন খন্দকার আরো জানান, প্রায় সময়ই দেখা যায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের ইচ্ছামতো আকার এবং যথাযথ রং ব্যবহার করা হয় না পতাকায়। অনেক প্রতিষ্ঠানে বিবর্ণ, ময়লা এবং ছেড়া পতাকাও উত্তোলন করা হয়। নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় সেটি না উত্তোলন করে যেনতেন ভাবে এই পতাকা উত্তোলন করা হয়। তাই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই রং এবং একই আকারের পতাকা উত্তোলন নিশ্চিত করতে এই পতাকা বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এ সময় বক্তব্য রাখেন- মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাওছার শোকরানা, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ছাইফুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষা অফিসার হাসিবুল ইসলাম। গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রেসক্লাব সেক্রেটারি তোফায়েল রেজা সুহেল, রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শেখ নমীর আলী, সেক্রেটারি জীবন আহমেদ লিটন, সাংবাদিক মখলিছ মিয়া, আশিকুল ইসলাম প্রমুখ। প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সর্দার আজিমুল হক স্বপন, সেক্রেটারি রায়হান উদ্দিন সুমন, সাংবাদিক দেওয়ান শোয়েব রাজা, আতাউর রহমান মিলন, মাওলানা শফিকুল ইসলাম শফিক, আনোয়ার হোসেন, জামাল উদ্দিন আলফু ও আলআমিন খান।