আগামী ২ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলায় পতাকা উৎসব সফল করতে জেলা প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন ॥ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের উদ্যোগ করেছেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ

মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ জাতীয় পতাকা আমাদের গর্ব ও অহংকার, আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাই জাতীয় পতাকার সঠিক মাপ নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষার্থীদের মনে পতাকার সম্মানবোধ জাগ্রত করার লক্ষ্যে আগামী ২ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জে উদযাপিত হবে পতাকা উৎসব। বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, এখনও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়সারাভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর সঠিক মাপ ও যথাযথ সম্মানের ব্যাপারে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তেমন ধারণা নেই। অথচ আমাদের একটি পতাকা বিধি আছে। তা অনেক সময়ই মানা হয় না। সঠিকভাবে পতাকা ব্যবহার করা হয় না। সঠিক মর্যাদা দেয়া হয় না। তাই আমরা মহান জাতীয় পতাকার গুরুত্ব ও সম্মানবোধের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মনে স্থান করে দিতে চাই। আমরা এ উৎসবের মাধ্যমে জেলার সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এক জায়গায় নিয়ে আসতে চাই। যেখানে এ ব্যাপারে সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জেলার ৯টি উপজেলার ১ হাজার ৫শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে উৎসবের উদ্বোধন করা হবে। এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
২ সেপ্টেম্বর প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের হাতে পতাকা হস্তান্তর করা হবে। আর হবিগঞ্জ শহরের পতাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে।
সংবাদ সম্মেলনে পতাকা উৎসব ছাড়াও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জেলা প্রশাসক। একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, হবিগঞ্জে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছুদিন ধরে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে মানুষের মাঝে সন্দেহ দানা বাঁধছে যে, প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান কি বন্ধ হয়ে গেছে? এর জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে আবারো অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। সেপ্টেম্বর মাসের যে কোন দিন থেকে হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন খোয়াই নদী দখলকারীদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে। এ লক্ষ্যে তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। দেখা যায় পুরাতন খোয়াই নদীতে সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। নির্মাণ করা হয়েছে চলাচলের রাস্তা। সবকিছুই তালিকায় লিপিবদ্ধ করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আমরা পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। তালিকা প্রায় শেষ পর্যায়ে। তালিকা করতে গিয়ে দেখা যায় উচ্ছেদ অভিযানে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। আমরা সকল জটিলতা কাটিয়ে সেপ্টেম্বরে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করব। উচ্ছেদ অভিযান শুরু করার পূর্বে সংবাদ সম্মেলন করে উচ্ছেদের সার্বিক দিক সাংবাদিকদের জানানো হবে বলে জানান সভায় উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া।
সভায় জেলা প্রশাসক জানান, শহরের পুরাতন খোয়াই নদীর আড়াই কিলোমিটার এলাকাকে নান্দনিক করাসহ ‘খোয়াই রিভার সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়নে ১ হাজার ৮৭২ কোটি টাকার যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল তা সংশোধিত হয়ে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পেলে দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি আশাবাদী।
সভায় জেলা প্রশাসককে জানানো হয় যে, শহরের কামড়াপুর থেকে কিবরিয়া ব্রিজ পর্যন্ত এবং শায়েস্তানগর এলাকায় যে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল সেখানে আবারো অবৈধ দখলদাররা স্থাপনা নির্মাণ করা শুরু করেছে। এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তাহলে অবৈধ দখলদারদের নোটিশ করা হবে। শর্ট নোটিশে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। এতে অবৈধ দখলদারদের জেল জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।