চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাট উপজেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সভাপতি ও চুনারুঘাট বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হোসেন আকল মিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামী রঞ্জন চন্দ্র পালের দ্বিতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রিমান্ড শুনানি শেষে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল আলিম তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। কোর্ট ইন্সপেক্টর শেখ নাজমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে প্রথম দফায় আকল মিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি রঞ্জন চন্দ্র পালের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
কোর্ট ইন্সপেক্টর শেখ নাজমুল হক জানান, প্রথম দফার রিমান্ড শেষে রঞ্জন পালের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক শরীফ রেজাউল করিম গত ৯ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর রঞ্জন পাল আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র ইন্সপেক্টর শরীফ মোঃ রেজাউল করিম অধিকতর তদন্তের জন্য পুনরায় রিমান্ড আবেদন করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১ মার্চ ভোরে চুনারুঘাট শহরের বাল্লা রোডের বাসা থেকে বের হয়ে মসজিদে ফজরের নামাজে যাওয়ার পথে বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন আকল মিয়া হামলার শিকার হন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম বকুল ঘটনার পরদিন রঞ্জন চন্দ্র পালকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে মামলার প্রধান আসামি রঞ্জন চন্দ্র পাল পলাতক ছিলেন। দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নিহতর ছেলে নাজমুল ইসলাম বকুল জানান, আমার পিতা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ চুনারুঘাট থানার একজন বিশিষ্ট মুরুব্বী হিসেবে সামাজিক সালিশ বিচারে বিচারকের ভূমিকা পালন করেছেন। বাজারের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী মৃত চান মিয়া মহাজন তালুকদারের একটি ভূমি আসামি রঞ্জল পাল ও কুতুব আলী ভুয়া দলিল তৈরী করে। পরে তারা মৃত চান মিয়া মহাজনের মেয়ে শিরিনের দখলে থাকা ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে ওই ভূমিতে দখলে যাওয়ার চেষ্টা করে। ভুক্তভোগী শিরিন তখন বাজার সভাপতি আকল মিয়ার শরণাপন্ন হলে আকল মিয়ার বলিষ্ঠ ভূমিকায় রঞ্জন পাল ও কুতুব আলী ওইড ভূমির দখলে যেতে পারেনি। এরই জের ধরে পরিকল্পনা করে আকল মিয়াকে হত্যা করা হয়।