হবিগঞ্জে কমিউনিস্ট পার্টির জনসভায় কমরেড রুহিন
গতকাল ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির উদ্যোগে আরডি হল মাঠে আয়োজিত জনসভায় কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন- দেশে উন্নয়নের চাকচিক্য এক শতাংশ বড়লোকের স্বার্থ রক্ষা করছে। বাকী ৯৯ শতাংশ মানুষ “দিন আনে দিন খাই” এর মধ্যে প্রতিদিন পার করছে। দেশ এক থাকলেও দুই অর্থনীতি বিরাজ করছে। বাজারে কেউ পকেট ভরে টাকা নিয়ে যায় আর কেউ কোনভাবে প্রয়োজনের থেকে কম বাজার করে দিন সারে। দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারীরা ব্যাংক খালি করে ফেলেছে। ইতিহাসের সর্বোচ্চ ঋণ খেলাপী এখন দেখা যাচ্ছে। টাকা পাচার আর সেকেন্ড হোম করে এদেশকে যারা পরিত্যাগ করেছে তারাই রাজত্ব করছে। অসৎ ব্যবসায়ী অসৎ আমলা আর অসৎ রাজনীতিবিদরা রাজনীতির দুর্বৃত্তায়িত ধারা তৈরি করেছে। এটা না ভাঙতে পারলে মানুষের মুক্তি মিলবে না। এরা মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। আগামীতে ভোটের কথা থাকলেও আরেকবার প্রহসনের নির্বাচনের প্রচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন- দেশে পুরো ভোট ব্যবস্থা ফেল করে গেছে। এর থেকে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে নির্বাচন ব্যবস্থার আমুল সংস্কার করতে হবে। জাতীয় সংসদের আনুপাতিক পদ্ধতি প্রবর্তন ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও আর্থিক ক্ষমতা সম্পন্ন জবাবদিহিতামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করতে হবে। দেশে দলীয় সরকারের অধীনে কোন ভাল নির্বাচন হওয়ার আলামত নেই। এজন্য নির্বাচনকালীন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তিনি দেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় থাকা ও যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যেতে নীতিহীন রাজনৈতিক দলগুলির জন্য এরা সুযোগ পাচ্ছে। তিনি উৎপাদন খরচ কমাতে ব্যবস্থা গ্রহণ, কৃষি জমির ধ্বংস বন্ধ, দ্রব্যমূল্য কমানো, সিন্ডিকেট ভাঙা, সারাদেশে রেশন ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান।
হবিগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক পীযুষ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক আজমান আহমেদের পরিচালনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড খন্দকার লুৎফুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জহরলাল দত্ত, হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য কমরেড আব্দুর রশিদ, অ্যাডভোকেট মখলিছুর রহমান, চৌধুরী মুহিবুন্নুর ইমরান, কমরেড আঃ ছাত্তার, রনজন কুমার রায়, আতাউর রহমান, কমরেড হাবিব, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট মুরলী ধর দাশ, জেলা উদীচীর সভাপতি বন্ধুমঙ্গল রায় প্রমুখ।
সভায় বক্তাগণ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, চা শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরী ৫০০ টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগের লোডশেডিং বন্ধ করা, শিল্পবর্জ্য দূষণের হাত থেকে সুতাং নদী সহ বিভিন্ন নদীনালা খাল জলাশয় রক্ষা করে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন করা, ব্যাটারী চালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইকের লাইসেন্স প্রদান সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো, রেশন ব্যবস্থা চালু ও ন্যায্যমূল্যের দোকান খোলার জোর দাবি জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি