চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের দেউন্দি টি কোম্পানীর দেউন্দি ও লালচান্দ চা বাগানে বকেয়া মজুরি, এরিয়ার বিল, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ও উৎসব বোনাস না পাওয়ায় প্রায় তিন হাজার চা শ্রমিক বাগানে কর্মবিরতি পালন করছে। তারা বুধবার সকাল থেকেই বাগানের কাজে যোগদান না করে প্রতিবাদ সমাবেশ ও কর্মবিরতি পালন করে। শ্রমিক নেতারা জানান, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা বাগানের কাজে যোগদান করবে না। এ অবস্থায় দুটি বাগানের ফ্যাক্টরিসহ চা পাতা চয়ন বন্ধ রয়েছে। এতে ক্ষতির মধ্যে পড়বে চা বাগানগুলো।
চা শ্রমিক নেতারা জানান, গত বছর প্রধানমন্ত্রীর ১৭০ টাকা মজুরী ঘোষণার পর প্রত্যেক চা শ্রমিকের এরিয়ার পাওয়ার কথা প্রায় ৩০ হাজার টাকা। সেখানে বিসিএস ও মজুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাদের প্রত্যেকের এরিয়ার ১১ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা আসে। সব বাগানে এরিয়ার পেলেও দেউন্দি ও লাল চান্দ চা বাগানের শ্রমিকরা এখনো এরিয়ার বিল পায়নি। বকেয়া রয়েছে তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা। ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না বাগানের নিয়মিত সাপ্তাহিক হাজিরার টাকা। এছাড়া চলতি দুর্গাপূজার উৎসব বোনাস ১০ অক্টোবরের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয়নি। এসব দাবিসহ ৭ দফা নিয়ে চা শ্রমিকরা মালিকদের চিঠি দিয়ে বোনাস ও এরিয়ার পরিশোধের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু মালিকপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে চা শ্রমিকদের এরিয়ার ও পিএফ এর টাকা পরিশোধ না করে শ্রমিকদের একটি চিঠি দেন দেউন্দি টি কোম্পানীর এমডি ওয়াহিদুল হক। তিনি এতে জানান, চায়ের মূল্য কমে যাওয়া, চা উৎপাদন হ্রাস পাওয়া এবং মালিকও ব্যাংক থেকে সময়মতো সাহায্য ও ঋণ না পাওয়ায় তাদের এরিয়ার এবং পিএফ এর টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। তবে দুর্গাপূজার উৎসব বোনাসের টাকা আগামী ১৭ অক্টোবরের মধ্যে পরিশোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে শ্রমিকরা। তারা বুধবার সকাল থেকে বাগান দুটিতে কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি শুরু করে। ফ্যাক্টরির সামনে এক সমাবেশে শ্রমিকরা জানায়, তারা এরিয়ার টাকা, উৎসব বোনাস ও পি এফ এর টাকা না পেলে কাজে যোগ দিবে না।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দেউন্দি বাগান সভাপতি প্রবীর বুনার্জী, গিলানী বাগান সভাপতি অমল ভৌমিক, রঘুনন্দন চা বাগান সভাপতি বিশু মুড়া, সাবেক ভেলী সাধারণ সম্পাদক মনিশংকর বাউরী, চা শ্রমিক রাকেশ চাষা, কার্ত্তিক বাকতী, বর্তমান ইউপি সদস্য, সুচিত্র দাস, অর্চনা ভৌমিক, অনিমা চাষা, সুসিলা চাষা প্রমুখ।
চা শ্রমিক নেতা প্রদীপ বোনার্জী জানান, দীর্ঘদিন ধরে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের এরিয়া বিল, মজুরি এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা দিচ্ছে না। কদিন পর আমাদের দুর্গাপূজা। মালিকপক্ষ এখনো আমাদের উৎসব ভাতা কিছুই দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা বাগানে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।