স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরে একদিনের বৃষ্টিতে তিনদিন ধরে বিদ্যুতবিহীন বিভিন্ন এলাকা। শুধু তাই নয়, গ্রাহকদের অভিযোগ, কি কারণে বিদ্যুত নেয়া হয়েছে, তাও জানতে পারেননি অনেকে। আবার বারবার ফোন দিলেও রিসিভ করা হয় না। কোনো কোনো সময় সরাসরি অভিযোগ দেয়ার পরও মেরামত করে দিচ্ছে না। গ্রাহকদের জন্য জরুরি নম্বর ছাড়ারও স্বয়ং ইঞ্জিনিয়ারকেও সমস্যার কথা অবগত করা হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন শহরবাসী।
গত বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে বিদ্যুত চলে যায়। যা পরের দিন শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বিদ্যুত সরবরাহ করা হলেও ছিলো লো-ভোল্ডেজ। যে কারণে লাইট ছাড়া অন্য কিছু চালাতে পারেননি গ্রাহকরা। যে কারণে ঘরে থাকা ইলেক্ট্রিক জিনিসপত্র বিকল হয়ে যায়। কোনো কোনো এলাকায় শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকেই আবারও বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। গতকাল শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত এ রিপোর্ট লেখাকালে অনেক এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ চালু হয়নি। যার ফলে গ্রাহকদের চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করেন- গত দুই দিনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো কোনো এলাকার গ্রাহকরা প্রায় ৩২ থেকে ৩৫ ঘণ্টা বিদ্যুতবিহীন ছিলেন। বিদ্যুত অফিসের দেয়া জরুরি নম্বরে কল করেও এ বিষয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আবার সরাসরি অফিসে অভিযোগ করতে গেলেও শুক্রবার কাউকে পাওয়া যায়নি। যে কারণে পানি না থাকায় শহরের মুসল্লিরা নামাজ পড়তে পারেননি, গৃহিণীরা তাদের গৃহস্থালী কাজ করতে পারেননি, মোমবাতি জ¦ালিয়ে চলতে হয়েছে, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ব্যাঘাত শিশু ও প্রবীণদের মাঝে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সবশেষ গত শুক্রবার রাতে বিদ্যুত নেয়া হলে গতকাল দুপুর নাগাদ শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুত ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলেও শায়েস্তানগর এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় সড়ক অবরোধ করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। পরে পুলিশ গিয়ে আশ^স্ত করলে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেন। পরে বিকালের দিকে ওই এলাকায় নতুন ট্রান্সফরমার লাগালে সন্ধ্যার দিকে বিদ্যুত আসে। এ ছাড়াও শহরের রাজনগর, ঈদগাঁহ বাইপাস, উত্তর মোহনপুর, শ্যামলী, সিনেমা হল, ইনাতাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখাকালে বিদ্যুত ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। ফলে গ্রাহকদের অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। এদিকে অনেক বিদ্যুত গ্রাহক আজকের মধ্যে বিদ্যুত ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হলে তারা কঠিন আন্দোলনে যাবেন বলে হুশিয়ারি দেন।
এ ছাড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়, বাসভবন, ডিসি বাংলো, শিল্পকলা একাডেমি, সার্কিট হাউজ, ইনাতাবাদ, অনন্তপুরসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। অনেককে প্রধান সড়কে জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে। আবার কোথাও কোথাও নৌকা দিয়ে পারাপার হতে দেখা যায়। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন একদিনের বৃষ্টিতেই যদি শহরের বিভিন্ন এলাকায় কোমড় পানি হয়, দুইদিনের বৃষ্টিতে শহর তলিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। শহরে ড্রেনের ওপর প্রভাবশালীদের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণসহ ময়লা আর্বজনা ফেলে পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com