একাত্তরের এই দিনে ১২৭ নিরীহ মানুষকে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল
নিতেশ দেব, লাখাই থেকে ॥ হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার ‘কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস’ আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে একসঙ্গে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাজাকারের সহযোগিতায় ১২৭ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। বাড়িঘরে আগুন দেওয়াসহ লুটপাট চালায় হানাদাররা। সেদিন আহত হয়েছিলেন শতাধিক নারী-পুরুষ। সেই সময় এতো মরদেহ এক সঙ্গে সৎকারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পাশের নদীতে মরদেহগুলো ভাসিয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় নারীরা। সেই বিভীষিকাময় দিনের কথা মনে করে আজও কেঁপে ওঠেন এলাকাবাসী।
লাখাই উপজেলার লাখাই ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামটি জেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত। যোগাযোগের তেমন ভালো মাধ্যম নেই। বর্ষায় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। গ্রামের শতকরা ৯৫ ভাগ লোকই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় রাজাকারের সাহায্যে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ভোরবেলায় হঠাৎ আক্রমণ চালায় ওই গ্রামে। এ সময় গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ স্থানীয় একটি পুকুরের পানিতে ডুব দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। তবুও রক্ষা পাননি দুই শতাধিক নিরীহ গ্রামবাসী। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে পালিয়ে থাকা গ্রামবাসীর মধ্যে ১২৭ জন ধরা পড়ে। এদের সবাইকে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে ফেলা হয়।
লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা সুলতানা বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ১৮ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হবে।