৭ বছর বয়সী মেয়ের করুণ মৃত্যুতে বাবা-মা’র বুকফাটা আহাজারি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের ট্রলি চালক রুমন মিয়া আর গৃহিনী লাইজু আক্তার ৭ বছর বয়সী মেয়ে নাদিয়া আক্তারকে নিয়ে সুখে-শান্তিতেই বসবাস করছিলেন। সম্প্রতি রুমন মিয়ার পিতা আব্দুল বারিক তাকে এক খন্ড জমি দেন নতুন বাড়ি করার জন্য। এই জমি পেয়ে মনের আনন্দে রুমন মিয়া হাওর থেকে ট্রলি দিয়ে মাটি এনে ঘর বানানোর জন্য ভিট তৈরি করছিলেন। গতকাল শনিবার দুপুরে তিনি ট্রলি দিয়ে হাওর থেকে মাটি নিয়ে আসেন নতুন ভিটেতে। এ সময় পিতার সাথে সাথে থেকে সহযোগিতা করে মেয়ে নাদিয়া আক্তার। মাটি বোঝাই ট্রলিটি রাস্তার উপরে রেখে বাবা রুমন যখন মাটি ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন নাদিয়া নিচে নেমে মাটির কাজ করছিল। এ সময় পিতা রুমন মিয়া ট্রলির উপর থেকে মাটির বড় বড় চাকা এক এক করে নিচে ফেলছিলেন। হঠাৎ একটি মাটির চাকা মেয়ে নাদিয়ার উপর পড়ে গেলে সাথে সাথে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করে। এ দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান পিতা রুমন মিয়া। তিনি নিচে নেমে মেয়েকে উদ্ধার করে দ্রুত নিয়ে আসেন হবিগঞ্জ আড়াইশ’ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে। ততক্ষণে নিথর হয়ে যায় শিশু নাদিয়া। হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাদিয়ার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তার বাড়িতে শুরু হয় কান্নার রুল। মেয়েকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পিতা রুমন মিয়া। শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে জ্ঞান হারান মা লাইজু আক্তার। নিহত নাদিয়া আক্তার স্থানীয় আতুকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল। বানিয়াচং থানার ওসি এমরান হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ নিহত নাদিয়ার লাশের ছুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। পরবর্তীতে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতে শিশু নাদিয়ার লাশের জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।