স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারা দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পরও থামছে না করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। খালি নেই হাসপাতালগুলোর আইসিইউ ও সাধারণ বেড। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে এম্বুলেন্সেই মারা যাচ্ছেন করোনা আক্রান্তরা। করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকার জনস্বার্থে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অপরদিকে, করোনার এই পরিস্থিতিতে অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউনের সুপারিশ করেছে জাতীয় পরামর্শক কমিটি। বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় লকডাউনের কথা বলা হয়েছে। গত ৭ই এপ্রিল অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩০তম সভা জুম এর মাধ্যমে এই সুপারিশ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা। সভায় কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনা শেষে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়। সারা দেশে উদ্বেগজনকভাবে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত ১৮টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও করোনা নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ দেয়া হয়।
এগুলো সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না, সংক্রমণের হার বাড়ছে। বিধিনিষেধ আরো শক্তভাবে অনুসরণ করা দরকার বলে কমিটি সুপারিশ করেছে। অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন ছাড়া এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবেনা বলে সভায় মতামত ব্যক্ত করা হয়। বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন ও মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায় পূর্ণ লকডাউন দেয়ার সুপারিশ করা হয়। দুই সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে আবার সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। শয্যা সংখ্যা, আইসিইউ সুবিধা, অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচেষ্ট। ডিএনসিসি হাসপাতাল আগামী সপ্তাহের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সরকারি পর্যায়ের এই কার্যক্রম এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালের রোগী ভর্তির বাড়তি চাপ থাকায় অতি দ্রুত আরো সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। সংক্রমণের হার বাড়ার কারণে করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে রোগীর ভিড় বাড়ছে, রিপোর্ট পেতেও সময় লাগছে। যারা টেস্ট করতে আসছেন তাদের একটা বড় অংশ বিদেশগামী যাত্রী। বিদেশে অভিবাসী কর্মজীবী মানুষ ছাড়া অন্যান্য যাত্রীদের বেসরকারি পরীক্ষাগারে পাঠাতে পারলে সরকারি ল্যাবরেটরিতে চাপ কিছুটা কমবে। বিদেশে অভিবাসী কর্মজীবী মানুষ ছাড়া অন্যান্য যাত্রীদের পরীক্ষা বেসরকারি পরীক্ষাগারে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন। এতে করে রোগীদের পরীক্ষা ও রিপোর্ট দ্রুত প্রদান করে আইসোলেশন নিশ্চিত করা যাবে, যা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম যুক্তরাজ্যে ফলপ্রসু হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও টিকা কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন আমদানি করে টিকাদানের সুপারিশ পুনরায় করা হয় সভায়।