এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে ৫ শতাধিক বাড়িঘর, গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিদ্যুত ব্যবস্থা। মঙ্গলবার রাতে প্রায় ১ ঘন্টার ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে হবিগঞ্জের অনেক এলাকা। জেলা সদরসহ আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিদ্যুত বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়ার কারণে সারাদিন চলে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। ঝড় চলে রাত সোয়া ১০টা পর্যন্ত। সোয়া ঘন্টার ঝড়ে সদর উপজেলার রিচি ইউনিয়নের ছোট বহুলা, তেঘরিয়া, ভাদৈ, উত্তর ভাদৈ, শিয়ালদাড়িয়া, শায়েস্তাগঞ্জ, নবীগঞ্জ, লাখাই, আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচংসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ শতাধিক কাঁচা ও আধাপাকা বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে যায়। শহরের পুরাতন হাসপাতাল সড়ক, সার্কিট হাউজ রোড, নার্সিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন রাস্তা, জজ কোর্ট সংলগ্ন রাস্তায় বেশ কয়েকটি গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে পড়ে। ঝড় শুরু হওয়ার সাথে সাথেই বিদ্যুৎ চলে যায়। অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকাগুলো।
ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন ছুটিতে আছেন বলে জানান। এ অফিসের দায়িত্বরত অফিস সহকারী নূর উদ্দিন জানান, ঝড়ে বেশ বাড়িঘর, গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। ইউনিয়নগুলো থেকে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলায় এর তথ্য সরবরাহ করা হয়। পরে তা জেলা অফিসে আসে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জেলায় কমপক্ষে ৩০টি স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে। একটি স্থানে ট্রান্সফরমারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পুরো জেলায়ই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হবিগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল মজিদ জানান, জেলা শহরের ৭টি স্থান থেকে খুঁটি ভেঙ্গে পড়ার খবর এসেছে। একটি ট্রান্সফরমারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আরও অনেক এলাকা ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়। লাইন মেরামতের কাজ চলছে। তবে কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ তমিজ উদ্দিন খান জানান, এই কালবৈশাখী ঝড়ে কৃষি জমির কোন ক্ষতি হয়নি। বরং বৃষ্টি হওয়ায় কৃষি জমির উপকার হয়েছে। তবে ক্ষতি হয়েছে বিদ্যুত বিভাগের।
এদিকে, রাতভর শহর ও শহরতলীর ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম। তিনি বলেন, ঝড়ের তা-বে হবিগঞ্জ পৌরসভায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাতেই পৌরসভার কর্মীদের নিয়ে আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি এবং যত দ্রুত সম্ভব সবকিছু স্বাভাবিক করার তাগিদ দিয়েছি।