হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের আতুকুড়া খান বাহাদুর এহিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মোটর ও সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল চলতি বছর বৃন্দাবন কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়েছিল আর নিহত রাজমিস্ত্রী মুখলিছ নানার দাফনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন

এসএম সুরুজ আলী/টিপু মিয়া ॥ হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের আতুকুড়া খান বাহাদুর এহিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মোটর ও সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত এবং মোটর সাইকেল আরোহীসহ আরো ৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন বানিয়াচং উপজেলা সদরের পুরানবাগ গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে মুখলিছ মিয়া (৫০) ও হবিগঞ্জ পৌর এলাকার উমেদনগরের শাকিল (২০)। গুরুতর আহত অবস্থায় ৫ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ শহরতলীর উমেদনগরের কয়েকজন যুবক ৫টি মোটর সাইকেল নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কে বেড়াতে যান। রাত ৮টার দিকে তারা মোটর সাইকেল চালিয়ে হবিগঞ্জ শহরের দিকে ফেরার পথে আতুকুড়া খান বাহাদুর এহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে পৌঁছামাত্র হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচংগামী একটি সিএনজি অটোরিকশার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে ৭ জন আহত হন। আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিএনজি যাত্রী মুখলিছ মিয়া মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মোটর সাইকেল আরোহী উমেদনগরের আরমান (২০), প্রান্ত (২০), শাকিল (২০), হবিগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থার হিসাবরক্ষক খাইরুল ইসলাম (২৬), ফিল্ড অফিসার ইয়াসিন আরাফাত ইমতিয়াজ (২৭) ও বানিয়াচং দত্তপাড়ার মনিরুল ইসলামের স্ত্রী হেমা বেগমকে (৩০) সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সিলেটে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরপরই মারা যান শাকিল। নিহত শাকিল উমেদনগর হাজী হাটির ব্যবসায়ী আফরোজ মিয়ার ছেলে। সে চলতি বছর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। শাকিলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তার চাচাতো ভাই ছাত্রদল নেতা হাফিজুল ইসলাম।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে হতাহতদের স্বজনরা ভিড় জমান। এ সময় দুর্ঘটনায় হতাহতদের শরীরে আঘাতের করুণ দৃশ্য দেখে অনেকে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।
নিহত মুখলিছ মিয়ার পারিবারিক সূত্র জানায়, তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। শায়েস্তাগঞ্জের আব্দুল্লাপুরের এক বাড়িতে রাজমিস্ত্রী হিসেবে নির্মাণ কাজ করছিলেন। গতকাল বিকেলে মুখলিছ মিয়াকে সংবাদ দেয়া হয়, তার নানা আহাদ মিয়া ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রাত ১০টার দিকে মরহুমের জানাজা শেষে লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়। নানার মৃত্যু সংবাদ শোনে জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করার জন্য মুখলিছ মিয়া আব্দুল্লাহপুর থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। তিনি উমেদনগরস্থ বানিয়াচং সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে গিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশা দিয়ে বানিয়াচঙ্গের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পথিমধ্যে দুর্ঘটনার শিকার হন। সংঘর্ষে মুখলিছ মিয়াসহ সিএনজি অটোরিক্সার ৪ যাত্রী ও মোটর সাইকেল আরোহী আহত হন। আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুখলিছ মিয়া মারা যান।