চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বন্ধ নেই বিদ্যালয়ের বেতন, পরীক্ষা ও ভর্তি ফি। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ৪১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় দুদফা বেতন ও পরীক্ষা ফি আদায়ের পর এবার ভর্তির জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। ভর্তির বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের কোন নির্দেশনা না আসলেও ভর্তি ফি আদায়ের জন্য বিদ্যালয়গুলো ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ দিচ্ছে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ৪১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় ২০২০ সালের বেতন ও পরীক্ষার ফি আদায় করেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন কার্যকর ভুমিকা দেখা যায়নি। তার মধ্যে সাবিহা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ও দুদফা পরীক্ষার ফি প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা আদায় করেও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপে সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন। একই ভাবে উপজেলার গাজীপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ তাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা বেতন ও পরীক্ষা ফি আদায় করে নানা সমালোচনার মুখে পড়ে। এ নিয়ে কেউ কেউ জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন নিবেদন করেও টাকা ফেরত পায়নি। এছাড়া চুনারুঘাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়, পঞ্চাশ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, রানীগাও উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ ও মাসুদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়সহ সকল বিদ্যালয়ে বেতন ও পরীক্ষার ফি আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষিত এসাইনমেন্ট দিতে গিয়ে আদায় করা হয়েছে টাকা। এর মধ্যে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ১৬০ টাকা করে সর্ব্বোচ্চ ফি আদায় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ এসব বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ কোন ভুমিকা নেয়নি। সারা বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের বেতন ফি দিতে হয়েছে। এর বাইরে পরীক্ষার ফি ও অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশনের নামে নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। এভাবে বন্ধের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
আগামী বছরের ভর্তির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোন নির্দেশনা এখনও আসেনি। অথচ বিদ্যালয়গুলো ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। চলতি বছর ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় এখনো শিক্ষার্থীরা সনদ পায়নি। অথচ তাদেরকে ভর্তির বিষয়ে বিদ্যালয়গুলো মাইকিং করে জানিয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির কার্যক্রম শেষ করা হবে। এনিয়ে অভিভাবকরা টেনশনে পড়েছেন। অনেকেই দৌঁড়াচ্ছেন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনে সনদের জন্য। এছাড়া ভর্তির নামে আদায় করা হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। সরকারী নির্দেশ এখনো আসেনি ভর্তিতে কত টাকা নিতে হবে। অথচ এসব বিদ্যালয় ইচ্ছামতো ভর্তির নামে টাকায় আদায় শুরু করে দিয়েছে।  চুনারুঘাটের সচেতন মহল বলছেন, ভর্তির নামে টাকা আদায়ের জন্যই তড়িগড়ি করে মাইকিং করছে। নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি ফি পৌর শহরে ১ হাজার টাকা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫শ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়, অথচ তারা এক জার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল হক জানান, কোন বিদ্যালয় সরকারি নির্দেশনার বাইরে যে কোন ফি কিংবা অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করলে ওই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।