আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ালেন রাহেল মিয়া
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোঃ মাসুদউজ্জামান মাসুক আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন লাভ করলেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কোন প্রার্থীই তাকে সমর্থন করছেন না। সকলেই মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র মোঃ ছালেক মিয়া জানান- আমি আমার কর্মী সমর্থকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। তবে তাঁর ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, তিনি এখনো আশাবাদী শেষ মুহূর্তে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। তবে শেষ মুহূর্তেও দলীয় মনোনয়ন না পেলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আতাউর রহমান মাসুক বলেন, দলীয় সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে ভাল মনে করেছেন তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি উনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আমি সব সময় চেষ্টা করেছি দলের ভালোর জন্য। দল আমাকে মূল্যায়ন করেননি তাতে আমার কোন দুঃখ নেই। জনগণ যদি আমাকে মূল্যায়ন করে তাতেই আমি খুশি। আর যেহেতু আমি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন করার জন্য প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিব। আমার বিশ^াস জনগণ আমাকে মূল্যায়ন করবেন। তিনি নির্বাচনী মাঠে থাকার অংশ হিসেবে গতরাতে তাঁর সমর্থনে শায়েস্তাগঞ্জে বিশাল মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন মেয়র প্রার্থী আতাউর রহমান মাসুক।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফজল উদ্দিন তালুকদার বলেন, আমি নির্বাচন করার লক্ষ্যে দীর্ঘ ৮ মাস ধরে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি। আমাকে আমার কর্মী সমর্থকরা সব সময় নির্বাচন করতে উৎসাহ অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন। দল যাকে ভাল মনে করেছে তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি দলীয় সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে আমি মেয়র পদে স্বতন্ত্র নির্বাচন করবো।
আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম শিবলু বলেন, আমি নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি অনেক আগেই। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আমার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। কর্মী সমর্থক ও এলাকাবাসীর দাবি আমি যেন নির্বাচনে অংশ নেই। আর তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেব।
আওয়ামী লীগ নেতা রাহেল মিয়া সরদার বলেন, দলীয় সভানেত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা আমাদের ভালোর জন্যই নিয়েছেন। আমাদের উচিৎ সভানেত্রীর সিদ্ধান্তকে মেনে নেয়া। স্বাগত জানানো। আমি দলীয় সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আমি আমার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান।
ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদুল ইসলাম শীতল বলেন, আমি আমার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। তাই দলীয় মনোনয়ন না পেলেও আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিব। এজন্য তিনি পৌরবাসী সকলের দোয়া কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন। শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদউজ্জামান মাসুক। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া সাক্ষরিত এক পত্রে তা নিশ্চিত করা হয়। গতকাল শনিবার মোঃ মাসুদউজ্জামান মাসুক দলীয় মনোনয়নের আদেশ গ্রহণ করেন।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ১ ডিসেম্বর, বাছাই ৩ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর ও ভোটগ্রহণ ২৮ ডিসেম্বর।