নদীপাড়ের ৪৫ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধা পাবে ॥ বন্যা থেকে রক্ষা পাবে জনগণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ গাজীর প্রচেষ্টায় নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার নদ নদীর তীর সুরক্ষা ও খনন কাজের জন্য ৫৭৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের অন্যতম বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র সুরক্ষার পাশাপাশি নবীগঞ্জ বাহুবলসহ জেলার নদ-নদীগুলোর আন্তসংযোগ সৃষ্টি হবে। নদ নদীগুলো ফিরে পাবে নব্যতা। রক্ষা পাবে বর্ষা মৌসুমে নদী এলাকার বন্যার পানিতে বানবাসি হাজার হাজার মানুষ। এছাড়াও নদীপাড়ের ৪০ থেকে ৪৫ হাজার হেক্টর জমির পরিকল্পিত সেচ সুবিধা তৈরি হবে।
নবীগঞ্জ উপজেলার দিগলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদীর উভয় পাড়ে বাধ না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে ওই সমস্ত এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় লাখ লাখ টাকার ফসল। ভেঙ্গে পড়ে অসংখ্য কাঁচা ঘর। শুধু তাই নয় ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে শতাধিক ঘর বাড়ি। ভিটেহীন হয়ে গেছে অসংখ্য পরিবার। কোন কোন বছর এই কুশিয়ারা এতো হিং¯্র রূপ ধারণ করে যে ওই এলাকার লোকজনকে পানিবন্দী হয়ে থাকতে হয় মাসাধিককাল। গত বর্ষা মৌসুমে বাধ ভেঙ্গে দিগলবাক, ইনাতগঞ্জ ও আউশকান্দি এলাকা প্লাবিত হলে গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ গাজী এমপি বিদেশ সফর বাতিল করে বানবাসি মানুষের পাশে ছুটে যান। তাৎক্ষণিক ২ কোটি টাকা বরাদ্দ এনে বস্তা ফেলে বাধ নির্মাণ করে রক্ষা করেন এলাকাবাসীকে। তার আহবানে সারা দিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ও পানিসম্পদ মন্ত্রী কুশিয়ারা ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে বাধ নির্মাণ ও খনন কাজের জন্য ৫শ’ কোটি টাকার প্রকল্প প্রদানের ঘোষণা দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার একনেকের সভায় ৫৭৩ কোটি টাকার কুশিয়ারা প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, আগামী মার্চ মাসের প্রথম দিকে ইজিপিতে দরপত্র আহবান করা হবে। প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুন মাসে শেষ হবে। পাউবো বলছে, এ প্রকল্পের মুল উদ্দেশ্য দেশের শীর্ষতম বিদ্যুত কেন্দ্র বিবিয়ানা পওয়ার স্টেশনকে সুরক্ষা দেয়া। এখানে ৪০০ মেগাওয়াট করে ১২০০ মেগাওয়াটের তিনটি বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। এ এলাকাটি সুরক্ষার জন্য কুশিয়ারা নদীর ঢাকা সিলেট মহাসড়কের শেরপুর সেতু থেকে নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দুর্গাপুর পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪০০ কিলোমিটার নদীর উভয় তীরে বাধ ও ব্লক নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি বাধের ওপর বৃক্ষরোপন করা হবে। এছাড়াও নবীগঞ্জ উপজেলার গোপলা নদী, বিজনা নদী ও বাহুবল উপজেলার করাঙ্গী নদীর ২০ কিলোমিটার খনন করা হবে।