রেলওয়ে কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বললেন, শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে ভূমিতে গড়ে উঠা ১ হাজার ৭ শ’ স্থাপনার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। উচ্ছেদ অভিযান শেষ হলে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার ভূমি উদ্ধার হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের অবৈধ স্থাপনাগুলো দ্বিতীয় দিনেও উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনটি এক্সকেভেটর দিয়ে ৫শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে রেল মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আবারও এ উচ্ছেদ পরিচালনা করা হবে বলে জানা গেছে।
অনেকেই পরিত্যক্ত জায়গা দখল করে লীজ নিয়েছেন রেলওয়ে হতে। নানা সময়ে দখলদারদের রেলওয়ের ভূমি ছাড়তে লাল ক্রস, নোটিশ ও মাইকিং করা হয়। কিন্তু কেউ নিজেদের অবস্থান থেকে সড়ে যায়নি। আবার কেউ কেউ নিজ ইচ্ছায় স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলে। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রেলওয়ে জংশনের ঐতিহ্যবাহী দাউদনগর পরগনার জমিদারদের দেওয়া রেলওয়ে ভূমিতে ঐতিহ্যবাহী দাউদনগর বাজার, বাল্লা রেলগেইট, রেলগেইট, মুক্তিযোদ্ধা হোটেল, রেলওয়ে গোদাম রোড, রেলওয়ে হাসপাতাল, রেলওয়ে নিজগাঁও দিঘীর পাড় এলাকা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ২ দিনে ৫ শতাধিক লীজকৃত দোকান, বস্তি উচ্ছেদ করে রেলওয়ে বিভাগ। উচ্ছেদ করার পাশাপাশি লীজ নেওয়া ও খাজনা নেওয়াকৃত অর্ধ শতাধিক দোকানও উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কেউ বাদ যায়নি। কিন্তু রাঘববোয়াল অনেকেই উচ্ছেদ থেকে রক্ষা পেয়ে গেছেন। রেলবিভাগ, জেলা প্রশাসন, পল্লী বিদ্যুত কর্মচারী, ফায়ার সার্ভিস, থানা পুলিশ প্রশাসন, র‌্যাব-৯ ও রেলওয়ে পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। এতে নেতৃত্ব দেন রেলওয়ে বিভাগীয় ভূসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা। উচ্ছেদ অভিযানের সময় এক্সকেভেটর যন্ত্রের সাহায্যে স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়। আবার লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ী অনেককে নিজ নিজ উদ্যোগে স্থাপনা সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। উচ্ছেদ অভিযান দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় করেন।
শায়েস্তাগঞ্জ শহরের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, লীজকৃত জায়গা এভাবে হঠাৎ উচ্ছেদ করা হবে তা কেউ ভাবেননি। এ কারণে ২ দিনে ৪ শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দোকান ও বস্তি উচ্ছেদ করা হয়। আবার কেউ রেলের জায়গায় পাকা ঘর এক থেকে তিন তলা ও দোকান স্থাপনা নির্মাণ করে বসবাস করলেও এদের উচ্ছেদ করা হয়নি।
রেলওয়ে বিভাগীয় ভূ-কর্মকর্তা মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে ভূমিতে গড়ে উঠা ১ হাজার ৭ শত স্থাপনার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এরমধ্যে ২ দিনে ৫ শতাধিক দোকান ও বস্তি উচ্ছেদ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবকটি উচ্ছেদ করা হবে। পুরো উচ্ছেদ অভিযান শেষ হলে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার ভূমি উদ্ধার করা যাবে বলে মনে করেছেন এই কর্মকর্তা। যে সকল স্থানে উচ্ছেদ করা হয়নি ২ মাসের মধ্যে ওইসব স্থাপনা সরিয়ে নিতে দখলদারদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।