এসএম সুরুজ আলী ॥ সিলেট বিভাগের ইয়াবা জগতের রানী বলে খ্যাত সাবিনা আক্তারকে (২৪) গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। গতকাল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) এসএম রাজু আহমেদ, হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোঃ এমরান হোসেন, এসআই আবুল কালাম আজাদসহ ডিবি পুলিশ সিলেটের লালাবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত সাবিনা সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার পাটাকইন গ্রামের তবারক আলীর স্ত্রী।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত সাবিনা আক্তার ও তার স্বামী তবারক আলী বৃহত্তর সিলেট বিভাগের অন্যতম মাদক ব্যবসায়ী। শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ এলাকায় প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ৬১ হাজার পিস ইয়াবা চালানের মূল হোতা সাবিনা আক্তার ও তার স্বামী তবারক আলী। উদ্ধারকৃত ইয়াবার চালান মূলত তাদেরই। গতকাল গ্রেফতারকৃত সাবিনাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন- সে ও কারাগারে থাকা দুইজনের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই চালানের সাথে আর কারা জড়িত রয়েছে তা বের করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত দেড়টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ মোহাম্মদ সেলিম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন হানিফ পরিবহনের একটি বাস দিয়ে সিলেট থেকে ঢাকায় বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার হচ্ছে। সংবাদটি পেয়ে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করে তিনিসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এসএম রাজু আহমেদের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই শামিম রেজা সঙ্গী ফোর্সসহ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জের নতুন ব্রীজ গোলচত্ত্বরের পশ্চিম পাশে চেকপোস্ট করাকালে হানিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসকে সংকেত দিয়ে থামান। এ সময় পুলিশ বাসটিতে তল্লাশী চালায়। তল্লাশীকালে বাসের যাত্রী মাদারীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর গাবতলী এলাকার সালামত পোয়াদা’র কন্যা নাহিদা বেগম (৩৩) ও বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ থানার ভাইজোরা গ্রামের আব্দুল কাদেরের কন্যা শাহিনা আক্তারকে (৪০) দ্রুত বাস থেকে নামতে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। এ প্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের নুর ম্যানশনের সামনের খালি জায়গায় নিয়ে নারী পুলিশ দ্বারা তাদের দেহ তল্লাশি করা হয়। এ সময় নাহিদা বেগমের কালো রংয়ের বোরকার নিচে লাল রংয়ের সেলোয়ারে গোজা ও কমলা/সাদা রংয়ের কামিজের নিচে পেট ও বুকের মাঝখানে ফিটিং করা অলাদাভাবে সাদা টেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ১৫৫ প্যাকেটে ৩১ হাজার পিস লালচে রংয়ের অ্যামফিটামিন যুক্ত ইয়াবা ট্যাবলেট ও ডান হাতে ধরা অবস্থায় মাদক ক্রয়-বিক্রয় ও বহনের কাজে ব্যবহৃত মোবাইল সেট এবং শাহিনা খাতুনের কালো রংয়ের বোরকার নিচে পরিহিত লাল রংয়ের সেলোয়ারে গোজা ও টিয়া/লাল রংয়ের কামিজের নিচে পেট ও বুকের মাঝখানে ফিটিং করা আলাদাভাবে সাদা টেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ১৫০ প্যাকেটে ৩০ হাজার পিস লালচে রংয়ের ইয়াবা ট্যাবলেট ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে। যারা তাদেরকে এসব ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেয়ার জন্য পাঠিয়েছিল। তাদের উভয়কে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারিক আদালত নং-০১ এর বিজ্ঞ বিচারক মোঃ সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে প্রেরণ করলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ ব্যাপারে ডিবি’র এসআই আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করেছেন।