নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নদীপারের মানুষ

সুমন আহমেদ বিজয়, লাখাই থেকে ॥ অব্যাহত শিল্প বর্জ্যে দূষিত হয়ে সুতাং নদী এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সোনালী ফসলের মাঠে বৈশাখের খরতাপে কৃষক যে নদীর পানি দিয়ে তৃষ্ণা মিটাত সেই নদীর পানি আজ বিষাক্ত। সুতাং নদীর পানি বর্তমানে এমন পর্যায়ে রয়েছে এর পানি ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। নদী পাড়ের মানুষ গোসলসহ প্রাত্যহিক বিভিন্ন কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতেন। কিন্তু এই পানি এখন এমনই রূপ ধারণ করছে তা ব্যবহার করা দূরের কথা দুর্গন্ধের কারনে নদীর পাড় দিয়ে চলাচল করাই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। বিলুপ্তির পথে প্রায় নদীতে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সুতাং নদীর পানির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ লাখাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম, হাট বাজার ও নদী পাড়ের মানুষ। লাখাই উপজেলার রাজধানীখ্যাত বুল্লা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুতাং নদী। নদীর পানির দুর্গন্ধে বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার হার অনেক কমে গেছে। সুতাং নদীর পাশেই উপস্থিত বুল্লা বাজার জামে মসজিদ। মসজিদের মুসল্লিরা প্রতি ওয়াক্তেই বুল্লা বাজার নৌকা ঘাটে ওযু করতেন সুতাং নদীর পানি দিয়ে। কিন্ত এখন আর ওযু করা যায় না দুর্গন্ধের কারনে।
এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, সুতাং নদীর পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় গ্রামবাসী গৃহস্থালি কাজে নদীর পানি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন। এমনকি গরু-ছাগলও এ পানি পান করছে না। মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জে স্থাপিত কলকারখানার বর্জ্যরে কারণে এমনটি হয়েছে দাবি স্থানীয়দের।
তিনি আরও বলেন, পানি দূষণের মাত্রা এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, গত কয়েক মাসের মধ্যে দূষিত পানির রূপ আর বদলায়নি।
উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্যের সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবত কল কারখানায় অপরিশোধিত বর্জ্যে দূষিত সুতাং নদী। সুতাং নদীর কালো পানি জমিতে সেচ দেওয়ার ফলে ধানের চারা প্রয়োজনীয় খারার গ্রহণ করতে পারে না। এতে ধান গাছে অপুষ্টি দেখা দিবে। লাখাইয়ে সুতাং নদীর পানির উপর সেচ নির্ভর অন্তত ২ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমির কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন ব্যাহতের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে উপজেলার বুল্লা ইউনিয়ন ও করাব ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ হাওড়ে এর প্রভাব বেশি দেখা দিবে। বৃহত্তর স্বার্থে সুতাং নদীকে শিল্প বর্জ্যরে হাত থেকে রক্ষা করার দাবি এলাকাবাসীর।