প্রতিকার চেয়ে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ আজমিরীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা হাসানের বিরুদ্ধে নিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নি¤œœমানের উন্নয়ন কাজ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন। শুক্রবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই অভিযোগ পাঠিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুছ সেন, সুশেনজিৎ চৌধুরী, ফয়েজ আহমেদ খেলু, নূরুল হক ভূইয়া ও আলী আমজাদ তালুকদার।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সেকেন্ড রুরাল ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (আরটিআইপি-২) অধীনে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ ভায়া শিবপাশার ৪ কিলোমিটার সড়কের কাজ করে যাচ্ছেন। গত ১৭ নভেম্বর এই প্রকল্প এলাকায় ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহের পর এলজিইডি’র ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করলে সিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না বলে ধরা পড়ে। এ বিষয়ে কথা বলায় উপজেলা প্রকৌশলীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান। এমনকি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে বদলিও করিয়ে দেন তিনি।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, উপজেলা চেয়ারম্যানের নিজ এলাকায় নিজের নামে কিংবা অংশীদার হিসেবে ঠিকাদারি করার বিধান না থাকলেও তিনি জাইকার অর্থায়নে হাওর ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট লাইভলিহুড ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (হিলিপ) আওতায় আজমিরীগঞ্জ-পাহাড়পুর সড়কের উন্নয়নের প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকার দুটি প্রকল্পের কাজ করছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাহিল-মর্তুজা (জেবি) গত বছরের ১২ মার্চ এই কার্যাদেশ পায়, যা বর্তমানেও চলমান।
আবেদনকারীরা বলেন, উপজেলা পরিষদের প্রতিটি সাধারণ সভায় তার আচরণ এবং অশালীন কথাবার্তায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সদস্যরা। চলতি অর্থ বছরের তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কোন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে এডিপি’র বরাদ্দ দেননি তিনি। এনিয়ে কথা বললে নিজের ইচ্ছেমতো প্রকল্প বরাদ্দ দেবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান বলেন, আমি ৩২ বছর ধরে ঠিকাদারি করে আসছি। এতদিন আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠেনি। প্রকৌশলীকে গালাগাল করার বিষয়টিও সত্য নয়। আর তালিকা অনুযায়ী কাজ সিলেকশন করে এডিপি’র বরাদ্দ দেওয়া হবে। তাদের অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। নিজেদের স্বার্থ হাসিল না হওয়ায় তারা এই অভিযোগ করছেন।
এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুশেনজিৎ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা অভিযোগ দিয়েছি। আশা করছি এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।